রাসূল (ﷺ) কে “আল্লাহর নূর বা আল্লাহর যাতি নূর বা যাতি নূরের তাজাল্লী বা আল্লাহর যাতি নূরের জ্যোতি” বলা যাবে কি না?

[পরিমার্জিত সংকলন ৩৭-৪০তম পর্ব]

♦রাসূল (ﷺ) কে “আল্লাহর নূর বা আল্লাহর যাতি নূর বা যাতি নূরের তাজাল্লী বা আল্লাহর যাতি নূরের জ্যোতি” বলা যাবে কি না?(৩৭ম পর্ব)

🌀অনেকে বলেন কোরআনে নূর বলা হয়েছে কিন্তু নূরের তৈরী বলা হয়নি, আবার কেউ বলেন শুধু রুহ মোবারক নূর কিন্তু দেহমোবারক নয়,আবার কেউ বলেন সাদা মাটির তৈরী (নাউযুবিল্লাহ!) আজকে ইন-শা-আল্লাহ সে বিষয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো-[২৯ম অংশ]

⏹️⏹️⏹️আজকের আলোচনা⏹️⏹️⏹️

রাসূল (ﷺ) হলেন সর্বপ্রথম সৃষ্টি,যাঁকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি হতো না।[13th Part]

🌀রাসূল (ﷺ) এঁর নবূয়াত অবধারিত ছিল এবং তিঁনি সৃষ্টিতে প্রথম আর প্রেরণে সর্বশেষ:

★১৯৯. আঁমি তখনো নবী ছিলাম যখন আদম (عليه السلام) দেহ এবং আত্মার (রুহের) মধ্যবর্তী ছিলেন।” এই হাদিসটির পর্যালোচনা:

ওহাবী সালাফীদের দ্বারা এ হাদিস কখনো জাল,কখনো দ্বয়ীফ বলে অপপ্রচার চলছে কারন একটাই তারা রাসুল (ﷺ) এঁর প্রতি বিদ্বেশ পোষন করে তাই রাসুলের প্রথম সৃষ্টি সম্পর্কিত হাদিসগুলোকে তারা পছন্দ করে না বলে জাল,জ্বয়ীফ বলে প্রচার করে।

★হাদিসটির সুত্র: সামান্য ভিন্ন রকম বর্ননাগুলো পাওয়া গেছে এই সকল সুত্রে কিন্তু মুল বিষয়বস্তু একই।

“আঁমি তখনও নবী ছিলাম,

“যখন আদম (عليه السلام) দেহ ও রুহের মধ্যবর্তী ছিল” অথবা,

“যখন আদম (عليه السلام) দেহ ও মাটির মধ্যে মিশ্রিত ছিল”★এক নজরে হাদিসটি বিভিন্ন সুত্র★

১ম সুত্র:

হযরত মাইসিরা আল ফজর (رضي الله عنه) এর সুত্রে যারা যারা বর্ননা করেছেন

১) ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (رحمة الله): মুসনাদে আহমদ
২) ইমাম বুখারী (رحمة الله) : আত তারিখুল কবীর
৩) ইমাম ত্বাবারানী (رحمة الله)
৪) ইমাম হাকিম (رحمة الله)
৫) ইমাম বায়হাকী (رحمة الله)
৬) ইমাম আবু নু’আইম (رحمة الله)

২য় সুত্র:

হযরত আল-ইরবাদ্ব ইবনে সারিয়া (رضي الله عنه) ওনার সুত্রে বর্ননা করেছেন

১) ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (رحمة الله)
২) ইমাম হাকিম (رحمة الله)
৩) ইমাম বায়হাকী (رحمة الله)

৩য় সুত্র:

হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) ওনার সুত্রে বর্ননা করেছেন

১) ইমাম হাকিম (رحمة الله)
২) ইমাম বায়হাকী (رحمة الله)
৩) ইমাম আবু নু’আইম (رحمة الله)

৪র্থ সুত্র:

হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) ওনার সুত্রে বর্ননা করেছেন

১) ইমাম বাযযার (رحمة الله)
২) ইমাম তাবারানী (رحمة الله) : আল-আওসাত
৩) ইমাম আবু নু’আইম (رحمة الله) তিনি
ইমাম শাবী (رحمة الله) এর সনদে➡ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে।

৫ম সুত্র:

হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (رضي الله عنه) থেকে

১) ইমাম আবু নু’আইম (رحمة الله) : উক্ত হাদিসটি মুরসাল
২) ইমাম তাবারানী (رحمة الله)
৩) ইবনে কাসীর (رحمة الله)
৪) ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতী (رحمة الله)

৬ষ্ট সুত্র:

ইবনে আবুল জাদ’আ (رضي الله عنه) থেকে ➡ইমাম ইবনে সা’দ (رحمة الله)

৭ম সুত্র:

হ্যরত মুত্বরিফ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আশ-শাখী (رضي الله عنه) থেকে ➡ ইমাম ইবনে সা’দ (رحمة الله)

৮ম সুত্র:

হযরত আমির (رضي الله عنه) থেকে ➡ ইমাম ইবনে সা’দ (رحمة الله)

সূত্রঃ হাফিজুল হাদিস (১লক্ষ হাদিসের হাফিজ) ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতী (رحمة الله) এর বিখ্যাত কিতাব: খাসাইসুল কুবরা,১ম খন্ড,পৃষ্টা: ৩-৪, (প্রকাশনী : বইরুত, দারুল দারুল কিতাবিল আরাবী)

৯ম সুত্র:

হযরত জাবির (رضي الله عنه) থেকে ➡ ইমাম ইবনে সা’দ (رحمة الله)

১০ম সুত্র:

হযরত আব্দুল্লাহ বিন সাকীক (رضي الله عنه) থেকে➡অনুরুপ বর্নিত [আদম (عليه السلام) যখন দেহ ও রুহের মধ্যবর্তী ছিল]

✊উপরের হাদিসগুলোকে আরো শক্তিশালী করে এই হাদিসটি:
“আদম (عليه السلام) সৃষ্টিরও প্রায় ১৪ হাজার বছর পুর্বে রাসুল (ﷺ) নুর হিসেবে বিদ্যমান ছিলেন ।”

বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকার আল্লামা ইমাম আহমদ কুস্তালানী (রহঃ) তাঁর সুপ্রসিদ্ধ কিতাব মাওয়াহেবে লাদুনিয়ায় হযরত ইমাম জয়নাল আবেদীন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে,তিনি তাঁর পিতা হযরত ইমাম হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে,তিনি তাঁর পিতা হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে,তিনি রাসুলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন,নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,”আঁমি হযরত আদম আলাইহিস সালাম সৃষ্টির ১৪০০০ বছর পূর্বে আল্লাহর নিকট নুর হিসাবে বিদ্যমান ছিলাম।” *****দলিল*****

*১. মাওয়াহেবে লাদুনিয়া,১ম খন্ড,পৃষ্ঠা-৯
*২. যুরকানী শরীফ,১ম খন্ড, পৃষ্ঠা-৪৬
*৩. সিরাতে হালাবিয়া,১ম খন্ড, পৃষ্ঠা-৩৭
*৪. হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামিন পৃষ্ঠা- ২৮
*৫. আনোয়ারে মুহাম্মদীয়া, পৃষ্ঠা- ০৯
*৬.ফতওয়ায়ে হাদিসিয়া,পৃষ্ঠা -৫১
*৭. ইমাম আযলুনী, কাশফুল খফা: ১/২৩৭
*৮.ইবনু কাছির, আল-বেদায়া ওয়ান-নেহায়া: ২/৪০২
*৯. সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফি সিরাতি খাইরিল ইবাদ,১ম খন্ড, ৬৯পৃষ্ঠা
*১০. নশরুত ত্বীব,৫ম পৃষ্ঠা ★★১ নং হাদিস★★

এ হাদিসটি হাযরাত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রা., আব্দুল্লাহ্ ইবনে সাক্বিক্ব, উমার বিন খাত্তাব রাদ্বীয়াল্লহু তাআ’লা আনহুম থেকেও বর্ণিত আছে।

হাযরত মাইসিরা আল ফাজর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত; তিনি প্রিয়নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) ‘কে জিজ্ঞেস করেছিলেন:

আঁপনি কখন থেকে নাবী? প্রিয়নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) ইরশাদ করেন: ‘আদম যখন দেহ আর আত্মার মাঝে’ আঁমি তখনো নাবী ছিলাম।
[আলবানী; সিলসিলাতুল আহাদিস আস সাহিহাহ, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৪৭১, হাদিস ১৮৫৬, আল মারিফ লিন নাশর; রিয়াদ, সৌদিআরব।] ★★২ নং হাদিস★★

হজরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্নিত সাহাবীগন জিজ্ঞেস করলেন , ”ইয়া রাসুলুল্লাহ (ﷺ) আপনে কখন নবী ছিলেন? রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, আঁমি তখনো নবী ছিলাম যখন আদম (عليه السلام) দেহ এবং রুহের মধ্যবর্তী ছিলেন।”
তথ্যসূত্র
*১. সুনানে তিরমিযী; আল মানাকিব, পরিচ্ছেদ ফাজল আন নাবী (صلى الله عليه و آله وسلم) , খণ্ড ৫, পৃ., ৫৮৫, হাদিস ৩৬০৯
*২. আহমাদ ইবনু হাম্বাল (رحمة الله); আল মুসনাদ, খণ্ড : ৪, ৫; পৃষ্ঠা ৬৬, ৫৯, হাদিস ২৩৬২০
*৩. হাকিম (رحمة الله); আল মুস্তাদরাক, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৬৬৫-৬৬৬, হাদিস ৪২০৯-৪২১০
*৪. ইবনু আবি শায়বাহ্ (رحمة الله); আল মুসান্নাফ, খণ্ড :৭, পৃষ্ঠা ৩৬৯, হাদিস ৩৬৫৫৩।
*৫. তাবরানী (رحمة الله); মা’জাম আল আওসাত, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ২৭২, হাদিস ৪১৭৫।

*৬. তাবরানী (رحمة الله); মা’জাম আল কাবীর, খণ্ড : ১২, পৃষ্ঠা ৯২, হাদিস ১২৫৭১।
*৭. আবু নাইম (رحمة الله); হিলইয়াতুল আউলিয়া, খণ্ড ৭, ৯, পৃষ্ঠা ১২২, ৫৩।
*৮. বুখারী (رحمة الله); তারিখ আল কাবীর, খণ্ড ৭, পৃষ্ঠা ৩৭৪, হাদিস ১৬০৬।
*৯. খালাল (رحمة الله); আস সূন্নাহ্, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১৮৮, হাদিস ২০০। সূত্রটি সহীহ্।
*১০. ইবনু আবি ‘আসিম (رحمة الله); আস সূন্নাহ্, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১৭৯, হাদিস ৪১১। এর সূত্র সহীহ্।

*১১. শাইবানী (رحمة الله); আহাদ ওয়াল মাসানী, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ৩৪৭, হাদিস ২৯১৮।
*১২. আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন হাম্বাল (رحمة الله); আস সূন্নাহ্, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৩৯৮, হাদিস ৮৬৪। এর সূত্র সহীহ্।
*১৩. ইবনু সা’দ (رحمة الله); তাবাকাত আল কুবরা, খণ্ড ১, ৭; পৃষ্ঠা ১৪৮, ৬০।
*১৪. ইবনু হিব্বান (رحمة الله); সিক্বাত, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪৭।
*১৫. ইবনু ক্বানী (رحمة الله); মা’জাম আস সাহাবা, খণ্ড ২, ৩; পৃষ্ঠা ১২৭, ১২৯, হাদিস ৫৯১, ১১০৩।

*১৬. ইবনু খিয়াস (رحمة الله); তাবাকাত, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৫৯, ১২৫।
*১৭. মুকাদ্দাসী (رحمة الله); আহাদিস আল মুখতারাহ, খণ্ড, ৯, পৃষ্ঠা ১৪২, ১৪৩; হাদিস ১২৩-১২৪।
*১৮. আবু আল মাহাসীন (رحمة الله); মুতাসীর আল মুখতাসার, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১০।
*১৯. দায়লামী (رحمة الله); মুসনাদ আল ফিরদউস, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৮৪।
*২০. ইবনে আসাকীর (رحمة الله); তারিখে দামিষ্ক আল কাবীর, খণ্ড ২৬, ৪৫, পৃষ্ঠা ৩৮২, ৪৮৮-৪৮৯।

*২১. লিয়ালকালাইয়ী (رحمة الله); ‘ইতিকাদ আহলুস সূন্নাহ্, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৭৫৩, হাদিস ১৪০৩।
*২২. খতীব বাগদাদী (رحمة الله); তারিখে বাগদাদ; খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৭০, হাদিস ১০৩২।
*২৩. আসকালানী (رحمة الله); তাহজিব আত তাহজিব; খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ১৪৭, হাদিস ২৯০।
*২৪. আসকালানী (رحمة الله); আল আসাবাহ, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ২৩৯।
*২৫. আসকালানী (رحمة الله); তা’জিল আল মুনফি’আহ, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৫৪২, হাদিস ১৫১৮।

*২৬. ইবনে ‘আব্দুল বার (رحمة الله); আল ইস্তিয়াব, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ১৪৮৮, হাদিস ২৫৮২।
*২৭. যাহাবী; সিয়ারু আল ‘আলাম আন নূবালা; খণ্ড ৭, ১১, পৃষ্ঠা ৩৮৪, ১১০। এই হাদিসটির সূত্র সহীহ্।
*২৮. জালাল উদ দ্বীন সুয়ূতি (رحمة الله); খাসাইস আল কুবরা; খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১৮।
*২৯. জালাল উদ দ্বীন সুয়ূতি; আল হাওয়ী লিল ফাতাওয়া; খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ১০০।
*৩০. ইবনু কাসীর; আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৩০৭, ৩২০-৩২১।

*৩১. জুরজানী (رحمة الله); তারিখে জুরজান; খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা ৩৯২, হাদিস ৬৫৩।
*৩২. ক্কুস্তালানী (رحمة الله); মাওয়াহিব আল লাদুন্নিয়া, খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা ৬০।
*৩৩. হাইসামী (رحمة الله); মাজমাউজ জাওয়ায়িদ, খণ্ড : ৮, পৃষ্ঠা ১২২;
*৩৪. আবু সা’দ আন নিশাবুরী (رحمة الله); শারাফ আল মুস্তাফা; খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা ২৮৬। হাদিস ৭৫। ★★৩ নং হাদিস★★

عن العرباض بن سارية الفزاري قال : سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول : ( إني عند الله مكتوب بخاتم النبيين وإن آدم لمنجدل في طينته (صحيح ابن حبان، كتاب التاريخ، باب من صفته صلى الله عليه و سلم وأخباره، رقم الحديث-৬৪০৪)

অনুবাদ-হযরত ইরবায বিন সারিয়্যা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন-আমি রাসূল (ﷺ) কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন-নিশ্চয় আঁমি আল্লাহ তাআলার কাছে সর্বশেষ নবী হিসেবে লিপিবদ্ধ ছিলাম তখন,যখন আদম (عليه السلام) মাটিতে মিশ্রিত ছিলেন।অপর সহিহ বর্ননায় আছে, যখন আদম (عليه السلام) রুহ ও দেহের মধ্যে ছিলেন।
তথ্যসূত্র
*(ক.) সহীহ ইবনে হিব্বান,হাদীস নং-৬৪০৪
*(খ.) মুসনাদে আহমাদ,হাদীস নং-১৭১৬৩
*(গ.) মুসনাদুল বাজ্জার,হাদীস নং-৪১৯৯,
*(ঘ.) মুসনাদুশ শামীন,হাদীস নং-১৪৫৫,
*(ঙ.) শুয়াবুল ঈমান,হাদীস নং-৩২২২,
*(চ.) মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদীস নং-৫৭৫৯,
*(ছ.) আল মু’জামুল কাবীর,হাদীস নং-৬৩১ ★★৪ নং হাদিস★★

عن عبد الله بن شقيق ؛ أن رجلا سأل النبي صلى الله عليه وسلم : متى كنت نبيا ؟ قال : كنت نبيا وآدم بين الروح والجسد (مصنف ابن ابى شيبة، كتاب المغازى، ما جاء في مبعث النبي صلى الله عليه وسلم، رقم الحديث-৩৭৭০৮)
অনুবাদ- আব্দুল্লাহ বিন শাকিক থেকে বর্ণিত। রাসূল (ﷺ) কে এক লোক প্রশ্ন করল-আঁপনি কখন থেকে নবী? তিঁনি বললেন-আমি তখন থেকেই নবী যখন আদম (عليه السلام) রুহ ও শরীরের মাঝামাঝি ছিলেন।
তথ্যসূত্র*
*(ক.) মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৩৭৭০৮,
*(ক.) মাশকিলুল আসার লিত তাহাবী, হাদীস নং-৫২২২,
*(গ.) কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল,হাদীস নং-৩১৯১৭,
*(ঘ.) জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-১৫৮৩৫

★২০০. সৃষ্টিতত্ত্ব: নবী করীম (ﷺ) হচ্ছেন সৃষ্টিগত দিক থেকে প্রথম নবী আর প্রেরিত হয়েছেন সর্বশেষে:

(১) ইমাম ইবনুল যাওজী (রহ:) [ওফাত ৫৯৭ হি]
কিতাব: জাদুল মাসীর ফী ইলমীত তাফসীর
সূরা আহযাব: ৭ নং আয়াত: ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা: ১৯১; প্রকাশনী: দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ,লেবানন

তিনি বলেন,
হযরত কাতাদা (রা:) থেকে বর্নিত, “আমাদের নবী করীম (ﷺ) হচ্ছেন সৃষ্টিগত দিক থেকে প্রথম নবী।”

(২) ইমাম ইবনে জারীর তাবারী (রহ:) [ওফাত ৩১০ হি]

ইসলামের ইতিহাসে লিখিত সর্বাধিক সমাদৃত ও গ্রহনযোগ্য সবচেয়ে প্রাচীনতম তফসীর হল তফসীরে জারীর ইবনে তাবারী।তিনি তার তফসীরে সুরা আহযাব ৭ নং আয়াতের ব্যখ্যায় লিখেন,
নবীজী (ﷺ) সৃষ্টিগত দিক থেকে প্রথম এবং প্রেরনের দিক থেকে সর্বশেষ নবী। হাদিসটি নিম্নরুপ:

রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, “
আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রথম নবীগনের মধ্যে আঁমাকে সৃষ্টি করেছেন আর প্রেরনের সময় সর্বশেষে প্রেরণ করেছেন।আর নবীগন থেকে অংগীকার নেয়ার ঘটনাও তিঁনি বিবৃতি করেছেন।

(৩) আল্লামা ইবনে কাসীর রহমতুল্লাহি আলাইহ নবীজির আও্বালিয়্যাত এর এ হাদিসখানা তাঁর তফসিরে ইমাম ইবনে আবি হাতেম থেকে মোত্তাসেল সনদ সহ বর্ণনা করেছেন হযরত আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে।

নবীজী (ﷺ) সৃষ্টির মধ্যে আঁমিই প্রথম আর প্রেরনের দিক থেকে আঁমিই সর্বশেষ নবী।
[আল্লামা ইবনে কাসীর, তফসিরুল কোরআনিল আজিমঃ ৬:১৭৭]

★২০১. হযরত আদম (আ:) এঁর অপ্রত্যাশিত ভাবে ভুল সংঘটিত হওয়া ও দুনিয়ায় আগমণ।হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্নিত।

عن عمر بن الخطاب رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لما أذنب آدم صلى الله عليه وسلم الذنب الذي أذنه رفع رأسه إلى العرش فقال أسألك حق محمد ألا غفرت لي فأوحى الله إليه وما محمد ومن محمد فقال تبارك اسمك لما لما خلقتني رفعت رأسي إلى عرشك فإذا هو مكتوب لا إله إلا الله محمد رسول الله فعلمت أنه ليس أحد أعظم عندك قدرا ممن جعلت اسمه مع اسمك فأوحى الله عز وجل إليه يا آدم إنه آخر النبيين من ذريتك وإن أمته آخر الأمم من ذريتك ولولاه يا آدم ما خلقتك

রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, হযরত আদম (আঃ) থেকে যখন অপ্রত্যাশিত ভাবে ভুল সংঘটিত হয়, [যার দরূন তাঁকে জান্নাত থেকে দুনিয়াতে প্রেরণ করা হয়, তখন তিঁনি সর্বদা কাঁদতে ছিলেন। আর দুই ও ইস্তেগফার পড়তে ছিলেন।]

তখন তিঁনি আল্লাহর দরবারে আরজ করলেন,হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (ﷺ) এঁর ওসীলায় আঁমি তোঁমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। তখন ওহী নাজীল হয়- মুহাম্মদ (ﷺ) কে (তুমি কিভাবে জানলে তুমি তো তাঁকে কখনো দেখ নি)?
তখন তিনি বলেন-যখন আঁপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন,আমার অভ্যন্তরে রুহ প্রবেশের পর মাথা তুলে আমি আরশে লেখা দেখলাম- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।তখনই আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, মুহাম্মদ (ﷺ) এঁর চেয়ে সর্বাধিক প্রিয় ব্যক্তিত্ব আর কেউ নেই
যার নাম আঁপনি স্বীয় নামের সাথে রেখেছেন।তখন ওহী নাজীল হল-তিঁনি সর্বশেষ নবী।তোমার সন্তানদের অন্তর্ভূক্ত হবে।যদি তিনি না হতেন, তাহলে তোমাকেও সৃষ্টি করা হতো না।” *****দলিল*****

*১.দালায়েলুন নাবায়িয়্যাহ,৫/৪৮৯ পৃ:
*২. মুসতাদরাকে হাকেম : ২/৪৮৬ পৃ: হা : ৪২২৮
*৩. ইমাম হাকেম নিশাপুরী (রহঃ) আল মাদখাল : ১/১৫৪

*৪.তাবরানী :আল মুজামুল আওসাত : ৬/৩১৩,হাদিস নং-৬৫০২
*৫. তাবরানী : আল মুজামুস সগীর : ২/১৮২ : হাদীস নং-৯৯২,
*৬. তাবরানী : মুজমায়ে কবীর’

*৭. ইমাম দায়লামী :আল মুসনাদিল ফিরদাউস : ৫/২২৭
*৮. কাশফুল খাফা : ১/৪৬ ও ২/২১৪
*৯. আবূ নুয়াইম : ‘হিলইয়াতুল আউলিয়া,

*১০. আল্লামা সুবকী (রহঃ) শিফাউস সিকাম
*১১. ইবনে আসাকির : নিজ ‘তারিখে দিমাশক’: ৭/৪৩৭ পৃ:
*১২. ইবনুল জাওজী : আল ওয়াফা বি আহওয়ালিল মোস্তফা : ৩৩

*১৩. ইবনুল জাওজী : বয়ানুল মিলাদুন্নবী (দরুদ ) : ১৫৮
*১৪.আল বিদায়া ওয়ান নেহায়া : ১/১৮ পৃ:
*১৫. ইবনে হাজর হায়সামী : মাযমাউজ যাওয়ায়েদ : ৮/২৫৩

*১৬. শিহাবউদ্দীন খাফাজী : ‘নাসীম আর-রিয়াদ’
*১৭.খাসায়েসুল কুবরা :১/১২;হা:১২
*১৮.আদ দুররে মানসুর : ১/১৪২

*১৯. মাওয়াহেবুল লাদুনিয়্যাহ : ১/ ৮২ ও ২/৫২৫
*২০. শরহে মাওয়াহিব : ১/১৭২
*২১.সীরাতে হালাবিয়্যাহ : ১/৩৫৫

*২২. মুহাদ্দিসে শাহ আব্দুল আজিজ দেহলভী : তফসীরে আজিযী,১/১৮৩
*২৩. ইমাম নাবহানী : শাওয়াহিদুল হক : ১৩৭
*২৪. আনোয়ার-ই-মোহাম্মাদীয়া, ৯-১০

*২৫. জাওয়াহিরুল বিহার : ২/১১৪
*২৬. ইমাম নাবহানী : হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামিন :৩১ পৃ: ও ৭৯৫ পৃ:
(মাকতুবাত এ তাওফিক হিয়্যাহ, কাহেরা,মিশর)

*২৭. আল্লামা শফী উকারবী : যিকরে হাসীন : ৩৭
*২৮. আশরাফ আলী থানবী : নুশরত্বীব :২৮
২৯. ফাযায়েলে আমাল, ৪৯৭,উর্দু এডিশন

🌹হাদিসের মান পর্যালোচনা🌹

*১. ইমাম হাকিম বলেছেন হাদিসটি সহীহ। আল মুস্তাদরাক-২/৬১৫
*২. ইমাম তকি উদ্দীন সুবকী বলেন, হাদিসটি হাসান।শিফাউস সিকাম,পৃ:১২০

*৩. ইমাম তকী উদ্দীন দামেশকী বলেন, হাদিসটি বিশুদ্ধ। দাফউ শুবহাহঃ ১/৭২
*৪. ইমাম কাস্তলানী বলেন, হাদিসটি বিশুদ্ধ।মাওয়াহিবুল লাদুনিয়াহঃ ১/১৬৫

*৫. ইমাম সামহুদী বলেন, হাদিসটি সহীহ। ওয়াফাউল ওয়াফাঃ২/৪১৯
*৬. ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী বলেন, বিভিন্ন সনদে বর্ণিত এ হাদিসটি বিশুদ্ধ।আল খাসায়েসুল কুবরাঃ১/৮
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
*৭. সালাফীদের গুরু ইবনু তাইমিয়্যাহ এ হাদিসটি দলিল হিসাবে তার কিতাবে উল্লেখ করেছেন। “যদি মুহাম্মাদ না হতেন, তবে আমি তোমাকে সৃষ্টি করতাম না’-এ হাদিসটি উল্লেখ করে বলেছেন,এ হাদিসটি পূর্বের কথাকে শক্তিশালী করেছে।
[মাজমাউল ফাতাওয়াঃ২/১৫৯]
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
*৮.বাতিলদের জবাবে ইমাম ইবনু কাসীর পরিস্কার বলেছেন, এই হাদিসটি বানোয়াট নয়।এটা দ্বারা নির্দ্বিধায় দলীল প্রদান করা যাবে।তিনি আরও বলেছেন, হাদিসের বর্ণনাকারী আব্দুর রাহমান বিন যায়েদ বিন আসলাম মিথ্যাবাদী নন। এবং এ হাদীসটি ও জাল নয়। বরং হাদীসটি হাসান লিগাইরিহী। এমন হাদিস দ্বারা দলিল প্রদান করা যাবে নিঃসন্দেহে।

[আস সীরাতুন নাবাওইয়্যাহ- ১/১৯৫]
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
*৯. বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস মুল্লা আলী কারী বলেন,এ কথাটি সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ।
[আল আসরারুল মারফুআহ,১/২৯৫, মাওয়ারিদুর রাবী ফি মওলদুন্নবী; ১/১৮]
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
*১০. দেওবন্দের অন্যতম আলেম আশ্রাফ আলী থানভীও উক্ত হাদিস পাকের ক্ষেত্রে ইমাম হাকেমের অনুরুপ সহিহ্ হওয়ার রায়কে গ্রহণ করেছেন।[নশরুত্তীব; পৃষ্ঠা ২৭।]
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
*১১. ইমাম ইবনূ হাযার হাইসামী (রহ:) স্বীয় প্রসিদ্ধ কিতাব ‘শারহে শামায়েল’ এ ইমাম হাকিমের রায় “হাদিসটি সহিহ্” হওয়াকে গ্রহণ কররেছেন।

[ইমাম ইবনূ হাযার হাইসামী (রহ:) ‘শারহে শামায়েল’; ১/১১৫]

*১২. শায়খ ইউসূফ নাবাহানী (রহ:) উক্ত হাদিস পাকের ক্ষেত্রে ইমাম হাকেমের অনুরুপ সহিহ্ হওয়ার রায়কে গ্রহণ করেছেন।

[ইমাম ইউসূফ নাবাহানী : যাওয়াহিরুল বিহার; ২/১১৪।]
তিনি তার অন্যান্য গ্রন্থেও অনুরুপ রায় গ্রহণ করেছেন:
১.হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামিন, পৃষ্ঠা ৭৯৫।
২.আনওয়ারে মোহাম্মাদিয়া,পৃ: ৯-১০
৩.শাওয়াহিদুল হক্ব,পৃষ্ঠা ১৩৭।
৪.আফদ্বালুস সালাত,পৃষ্ঠা ১১৭।

*১৩. রিযাল শাস্ত্রবিদদের অন্যতম আল্লামা আযলূনী (রহ:) স্বীয় ‘কাশফুল খাফা’ এর দুই স্থানে উক্ত হাদিস পাকের ক্ষেত্রে ইমাম হাকেমের অনুরুপ সহিহ্ হওয়ার রায়কে গ্রহণ করেছেন।
[কাশফুল খাফা; ১/৪৬, ২/২১৪]

*১৪. আল্লামা ইসমাইল হাক্বী (রহ:) উক্ত হাদিস পাকের ক্ষেত্রে ইমাম হাকেমের অনুরুপ সহিহ্ হওয়ার রায়কে গ্রহণ করেছেন।
[তাফসিরে রুহুল বয়ান,পৃষ্ঠা ২/৩৭০]

✌সুতরাং প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসগণের এসব মন্তব্যের পর আর কোনো সন্দেহ থাকল না; নিঃসন্দেহে বলা যায় হাদিসটি সহীহ।

⏺️হাদিস শরীফে এভাবেও ইরশাদ হয়েছে

روى سيدنا عبد الله بن عمر رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وآله وسلم (لما اقترف آدم الخطيئة قال: يا رب أسألك بحق محمد إلا غفرت لي فقال الله تعالى يا آدم كيف عرفت محمدا ولم أخلقه؟ قال: يا رب إنك لما خلقتني رفعت رأسي فرأيت علي قوائم العرش مكتوبا لا إله إلا الله محمد رسول الله فعلمت أنك لم تضف إلى اسمك إلا أحب الخلق إليك فقال الله تعالى صدقت يا آدم إنه لأحب الخلق إلى وإذ سألتني بحقه فقد غفرت لك ولو لا محمد ما خلقتك

অনুবাদ: হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল [ﷺ] বলেছেন, যখন আদম আলাইহিস সালামের কাছে তাঁর নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল ভক্ষণের বিষয়টি ধরা পড়ল,তখন তিঁনি বললেন, হে আল্লাহ,আমি মুহাম্মাদের [ﷺ] ওয়াসীলা নিয়ে তোমার দরবারে ফরিয়াদ করছি, আমাকে ক্ষমা করে দাও।অতঃপর আল্লাহ বললেন, হে আদম, তুমি মুহাম্মাদকে কীভাবে চিনলে, এখনো যাকে সৃষ্টি করি নাই?
আদম (আ:) বললেন,হে আল্লাহ,তুমি যখন আমাকে সৃষ্টি করেছিলে,আমি তখন আমার মাথা উঠিয়েছিলাম।তখন দেখতে পেয়েছিলাম, আরশের খুটিগুলোর উপর লেখা,লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম, সমগ্র সৃষ্টির মধ্য সবচেয়ে প্রিয় না হলে তুমি তাঁর নাম তোমার নামের সাথে মিলাতে না।

অতঃপর আল্লাহ বললেন, হে আদম তুমি ঠিকই বলেছ। নিশ্চয়ই সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে সে আমার সবচেয়ে প্রিয়, আর যেহেতু তুমি তাঁর ওয়াসীলা নিয়ে আমার কাছে দোয়া করেছ, তাই তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম। আর (জেনে রাখ), মুহাম্মাদকে সৃষ্টি না করলে আমি তোমাকে সৃষ্টি করতাম না। *******দলিল******

*১. দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাকী ৫/৪৮৯
*২. আল মুস্তাদরাক লিল হাকিম-২/৬১৫
*৩. আল মু’জামুল আওসাত লিত তাবারানী- ৬৪৯৮

✌যে সকল মুহাদ্দিসীন এ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন:

*(ক.) ইমাম হাকিম বলেছেন হাদিসটি সহীহ।আল মুস্তাদরাক-২/৬১৫
*(খ.) ইমাম তকি উদ্দীন সুবকী বলেন, হাদিসটি হাসান। শিফাউস সিকাম,পৃ:১২০

*(গ.) ইমাম তকী উদ্দীন দামেশকী বলেন, হাদীসটি বিশুদ্ধ। দাফউ শুবহাহ: ১/৭২
*(ঘ.) ইমাম কস্তল্লানী বলেন, হাদিসটি বিশুদ্ধ।মাওয়াহিবুল লাদুনিয়াহ: ১/১৬

*(ঙ.) ইমাম সামহুদী বলেন, হাদিসটি সহীহ।ওয়াফাউল ওয়াফা: ২/৪১৯
*(চ.) ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী বলেন, বিভিন্ন সনদে বর্ণিত এ হাদিসটি বিশুদ্ধ।আল খাসাইস: ১/৮

*(ছ.) ইবনু তাইমিয়্যাহ এ হাদীসটি দলীল হিসাবে তাঁর কিতাবে উল্লেখ করেছেন। মাজমাউল ফাতাওয়া: ২/১৫৯

★২০২. এ প্রসংগে আরো এরশাদ হয়েছে :
ﺣﺪّﺛﻨﺎ ﺃﺑﻮ ﺟﻌﻔﺮ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮﻭ، ﺣﺪّﺛﻨﺎ ﺃﺣﻤﺪ ﺑﻦ ﺇﺳﺤﺎﻕ ﺑﻦ ﺻﺎﻟﺢ، ﺣﺪّﺛﻨﺎ ﻣﺤﻤﺪ ﺍﺑﻦ ﺻﺎﻟﺢ، ﺣﺪّﺛﻨﺎ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﺳﻨﺎﻥ ﺍﻟﻌﻮﻓﻲ، ﺣﺪّﺛﻨﺎ ﺇﺑﺮﺍﻫﻴﻢ ﺑﻦ ﻃﻬﻤﺎﻥ ﻋﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﺑﻦ ﻣﻴﺴﺮﺓ، ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺳﻔﻴﺎﻥ، ﻋﻦ ﻣﻴﺴﺮﺓ ﻗﺎﻝ ﻗﻠﺖ : ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ، ﻣﺘﻰ ﻛﻨﺖ ﻧﺒﻴﺎً؟ ﻗﺎﻝ : « ﻟَﻤَّﺎ ﺧَﻠَﻖَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺍﻷﺭْﺽَ ﻭَﺍﺳْﺘَﻮَﻯ ﺇﻟَﻰ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀِ ﻓَﺴَﻮَّﺍﻫﻦَّ ﺳَﺒْﻊَ । ﺳَﻤَﻮﺍﺕٍ ﻭَﺧَﻠَﻖَ ﺍﻟﻌَﺮْﺵَ ﻛَﺘَﺐَ ﻋَﻠَﻰ ﺳَﺎﻕِ ﺍﻟﻌَﺮْﺵِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٌ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﺍِ ﺧَﺎﺗَﻢُ ﺍﻷﻧْﺒِﻴَﺎﺀِ ﻭَﺧَﻠَﻖَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ ﺍﻟَّﺘﻲ ﺃﺳْﻜَﻨَﻬَﺎ ﺁﺩَﻡَ ﻭَﺣَﻮَّﺍﺀَ ﻓَﻜَﺘَﺐَ ﺍﺳْﻤِﻲ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻷﺑْﻮَﺍﺏِ ﻭَﺍﻷﻭْﺭَﺍﻕِ ﻭَﺍﻟﻘِﺒَﺎﺏِ ﻭَﺍﻟﺨِﻴَﺎﻡِ ﻭَﺁﺩَﻡُ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﺮُّﻭﺡِ ﻭﺍﻟﺠَﺴَﺪ

হযরত মায়সারাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত।তিনি বলেন -আমি রাসূল(ﷺ) কে জিজ্ঞাসা করলাম হে রাসূল (ﷺ) আঁপনি কখন থেকে নবী ছিলেন? নবীজি বললেন আল্লাহ তাআলা যখন জমিন সৃষ্টি করলেন অতঃপর আসমানের দিকে মনোনিবেশ করলেন অতঃপর আসমানকে সাতটি স্তরে তৈরি করলেন অতঃপর আরশ তৈরি করলেন এবং আরশের খুটিতে লিখে দিলেন মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সর্বশেষ নবী।

অতঃপর আল্লাহ জান্নাত সৃষ্টি করলেন যেখানে হযরত আদম ও হাওয়া (আঃ) বাস করেছিল। আর আঁমার নাম জান্নাতের দরজা সমূহে, লিখে দেওয়া হয়েছিল। তখনো আদম রুহ ও শরীরে আলাদা ছিলো এবং (অামি তখনো নবী ছিলাম)।
[ইবনে জাওযি রহঃ : আল ওয়াফা ফি আহওয়ালিল মোস্তফা : পৃঃ ২৬]

✌ইমাম মুহাম্মদ ইউসুফ আল সালেহী (রহ:) বলেন-
ﻭﺭﻭﻯ ﺍﺑﻦ ﺍﻟﺠﻮﺯﻱ ﺑﺴﻨﺪ ﺟﻴﺪ ﻻ ﺑﺄﺱ ﺑﻪ
✌ইবনে জাওযি (রহ:) অত্র হাদিস বর্ণনা করেছেন, এটির সনদ শক্তিশালী এবং এতে কোন ত্রুটি নেই।
[সুবুলুল হাদি ওয়ার রাশাদ, ১/৮৬]

⏩প্রক্তপক্ষে, নবিজীর শান মোবারক কখনো বলে শেষ করা যাবে না।যেমন হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে-হযরত আবু বকর (রা:) হতে বর্নিত, তিনি বলেন,রাসুল (সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা আমাকে লক্ষ্য কনে বলতে শুনেছি ”হে আবু বকর! শুনে রেখো আঁমার হাকীকত আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না।
দলিল
*১. ইমাম ফার্সীঃ মাতালেউল মুসাররাতঃ১২৯ পৃঃ
*২. ইমাম নাবহানীঃযাওয়াহিরুল বিহারঃ৩/৬৭পৃঃ; ২/২৫৫পৃঃ ; ২/১৫পৃঃ
*৩. শায়খ আবদুল হক মোহাদ্দেস দেহলভীঃ শরহুল ফতহুল গায়বঃ১/৩৪০পৃঃ

✌আজ পর্যন্ত কোন মোহাদ্দেস উক্ত হাদিস সম্পর্কে কোন মন্তব্য করেন নি।তাই মোহাদ্দেসদের নীরবতা দ্বারা প্রমাণিত হয় উক্ত হাদিস নিঃসন্দেহে সহীহ।

✌অপরদিকে উক্ত হাদিসের সমর্থনে আরেফীনকুল সম্রাট হযরত বায়েজীদ বোস্তামী(রহঃ) বলেন,“আল্লাহর মারেফাতের (পরিচয়ের) সমুদ্রে আমি ডুব দিয়ে ছিলাম,তার কারণ হল আমি যাতে রাসুল(সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এঁর হাকীকতের পরিচয় পেতে পারি।কী আশ্চার্য! আমি এ হাকীকতের মধ্যখানে আমার এবং রাসুল(সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এঁর মাঝে এক হাজার নূরের পর্দা প্রতিবন্ধক হয়ে গেল।যদি আমি এই নূরের পর্দা সমূহের প্রথম পর্দার নিকটে যাই তাহলে আমি জ্বলে ছাই হয়ে যাব, যেমনিভাবে একটি চুল আগুনের নিকটে গেলে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।”

[ইমাম নাবহানীঃ যাওয়াহিরুল বিহারঃ৩/৬৭পৃঃ]

♦রাসূল (ﷺ) কে “আল্লাহর নূর বা আল্লাহর যাতি নূর বা যাতি নূরের তাজাল্লী বা আল্লাহর যাতি নূরের জ্যোতি” বলা যাবে কি না?(৩৮ম পর্ব)

🌀অনেকে বলেন কোরআনে নূর বলা হয়েছে কিন্তু নূরের তৈরী বলা হয়নি, আবার কেউ বলেন শুধু রুহ মোবারক নূর কিন্তু দেহমোবারক নয়,আবার কেউ বলেন সাদা মাটির তৈরী (নাউযুবিল্লাহ!) আজকে ইন-শা-আল্লাহ সে বিষয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো-[৩০ম অংশ]

⏹️⏹️⏹️আজকের আলোচনা⏹️⏹️⏹️

রাসূল (ﷺ) হলেন সর্বপ্রথম সৃষ্টি,যাঁকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি হতো না।[14th Part]

🌀রাসূল (ﷺ) এঁর নবূয়াত অবধারিত ছিল এবং তিঁনি সৃষ্টিতে প্রথম আর প্রেরণে সর্বশেষ:

★২০৩. “হাদীসের নামে জালিয়াতি” গ্রন্থের ৩৪৭ পৃষ্ঠায় লেখক এ সহীহ হাদিসটিকে দ্বঈফ বানানোর অনেক অপচেষ্টা চালিয়েছেন।

★ইমাম তাবরানী,বাগভী (رحمة الله)সহ একজামাত মুহাদ্দিগণ সংকলন করেন-

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ حَمْزَةَ، ثَنَا أَبُو الْجُمَاهِرِ، ثَنَا سَعِيدُ بْنُ بَشِيرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ؓ، أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ ﷺ قَالَ كُنْتُ أَوَّلَ النَّبِيِّينَ فِي الْخَلْقِ وَآخِرَهُمْ فِي الْبَعْثِ

‘‘তাবেয়ী হাসান বসরী (رحمة الله) হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন।তিনি আল্লাহর রাসূল (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন,তিনি ইরশাদ করেন,আঁমি সৃষ্টিতে সমস্ত নবীদের পূর্বে এবং প্রেরণের দিক দিয়ে নবীদের শেষ।’’
✳️✳️✳️✳️দলিল✳️✳️✳️✳️
*(ক.) ইমাম তাবরানী,মুসনাদিশ শামেয়্যীন: ৪/৩৪ পৃ. হা/২৬৬২
*(খ.) ইমাম দায়লামী: আল ফিরদাউস: ৩/২৮২ পৃ. হা/৪৮৫০,৭১৯৫
*(গ.) ইমাম বাগভী: মাআলিমুত তানজীল: ৩/৫০৮ পৃ.
*(ঘ.) আল্লামা ইবনে কাসীর: তাফসীরে ইবনে কাসীর: ৩/৪৭০ পৃ.
*(ঙ.) আল্লামা আলূসী: তাফসীরে রুহুল মায়ানী: ১২/১৫৪ পৃ.
*(চ.) আল্লামা ইমাম জালাল উদ্দিন সূয়তী: তাফসীরে দুররে মনসুর: ৬/৫৭০ পৃ.
*(ছ.) ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি, খাসায়েসুল কোবরা: ১/৫ পৃ. হা/১
*(জ.) ইমাম ইবনে আদি: আল কামিল: ৩/৩৭৩ পৃ.

✊রাসূল (ﷺ) হযরত আদম (عليه السلام)‘র বহু আগেই সৃষ্টি, যদিও প্রেরিত হয়েছেন সকল নবির শেষে।এ প্রসঙ্গে ‘হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত রাসূল (ﷺ) নিঁজেই ইরশাদ করেন-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رضى الله تعالى عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: كُنْتُ أَوَّلَ النَّبِيِّينَ فِي الْخَلْقِ وَآخِرَهُمْ فِي الْبَعْثِ-

‘‘আঁমি ছিলাম সৃষ্টিতে নবিগণের সর্বপ্রথম এবং প্রেরণে নবীগণের সর্বশেষ।’’
✳️✳️✳️✳️দলিল✳️✳️✳️✳️
*(ক.) ইমাম আদী: আল কামিল: ৩/৩৭৩ পৃষ্ঠা
*(খ.) দায়লামী: ফিরদাউস বিমাসুরিল খিতাব: ৩/২৮২ পৃ হাদিস: ৪৮৫০, দায়লামী: ফিরদাউস বিমাসুরিল খিতাব: ৪/৪৪১ পৃ: হাদিস: ৭১৯৫
*(গ.) আযলূনী: কাশফুল খাফা: ২/১১৯ পৃ: হাদিস: ২০০৭
*(ঘ.) ইমাম বগভী: মা‘লিমুত তানজিল: ২/৬১১ পৃষ্ঠা,হাদিস ১৬৮০
*(ঙ.) ইবনে কাসীর: তাফসীরে ইবনে কাসীর : ৬/৩৮২ পৃষ্ঠা,ও সিরাতে নববিয়্যাহ, ১/২৮৯ পৃষ্ঠা, ১/৩১৮ পৃষ্ঠা *(চ.) সুয়ূতি: খাসায়েসুল কুবরা: ১/৫ হাদিস: ১
*(ছ.) আবু নুয়াইম ইস্পাহানী: দালায়েলুন নবুওয়াত: ১/৪২ পৃষ্ঠা,হাদিসঃ ৩
*(জ.) আবি হাতেম: আত্ তাফসীর: ৯/৩১১৬ পৃষ্ঠা,হাদিসঃ ১৭৫৯৪
*(ঝ.) মুত্তাকি হিন্দী কানযুল উম্মাল: ১১/৪৫২ পৃষ্ঠা,হাদিসঃ ৩২১২৫
*(জ.) তাবরানী,মুসনাদিস্-শামীন,৪/৩৪ পৃষ্ঠা,হাদিস ২৬৬২,মুয়াস্সাতুর রিসালা, বয়রুত,লেবানন।

✊এই হাদিসটি এক সূত্রে সহীহ, আরেকটি সূত্রে ‘হাসান’ পর্যায়ের।

قَالَ قَتَادَةُ : إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:كُنْتُ أَوَّلَ الْأَنْبِيَاءِ فِي الْخَلْقِ وَآخِرَهُمْ فِي الْبَعْثِ
‘‘হযরত কাতাদা (رحمة الله) হতে সহীহ সনদে মুরসাল সূত্রে বর্ণিত নিশ্চয়ই রাসূলে করীম (ﷺ) ইরশাদ করেন: আমি সৃষ্টিতে নবীদের প্রথম এবং প্রেরণের দিক দিয়ে সবার শেষে।’’
✳️✳️✳️✳️দলিল✳️✳️✳️✳️
*(ক.) শায়খ ইউসূফ নাবহানী: যাওয়াহিরুল বিহার: ৩/৩৬৬পৃ:
*(খ.) ইবনে সা‘দ: আত্-তবকাতুল কোবরা: ১/১৪৯ পৃষ্ঠা
*(গ.) ইমাম বগভী: তাফসীরে মা’লিমুত তানযিল: ৪/৪৩৫পৃ:
*(ঘ.) ইমাম তবারী: তাফসীরে তবারী: ১০/২৬২, তিনি বলেন হাদিসটির সনদ সহীহ
*(ঙ.) দায়লামী: মুসনাদিল ফিরদাউস: হাদিস: ৪৮৫০
*(চ.) আবু নুঈম ইস্পাহানী: দালায়েলুল নবুয়ত,হাদিস ৩
*(ছ.) ইমাম আদি: আল-কামিল: ৩/৪৯ পৃ হাদিস: ৩৭২
*(জ.) ইমাম কাযি আয়াজ,শিফা, ১/১১৪ পৃষ্ঠা,ও ১/৪৬৬ পৃষ্ঠা
*(ঝ.) তাবরানী: মুসনাদিস্-সামীন: ৪/২৬৬২ পৃষ্ঠা।

🔽ইমাম সুয়ূতী সহ আরও অনেকে হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন।’’

ইমাম সুয়ূতি, জামেউস সগীর, ২/২৪৮ পৃষ্ঠা, হা/৬৪২২-২৩

★২০৪. কাতাদার সাথী সাঈদ ইবনে বাশিরের গ্রহণযোগ্যতা:

ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর এ হাদিসের সিকাহ রাবী ‘সাঈদ’ প্রসঙ্গে লিখেন-‘‘এ হাদীসের বর্ণনাকারী সাঈদ ইবনু বশীর হাদীস বর্ণনায় দুর্বল ছিলেন।’’ অথচ হযরত কাতাদা (رحمة الله) ছাত্র ‘সাঈদ ইবনু বাশীর বাছরী’ এর হাদিসের মান ‘সহীহ’ তাতে কোনো সন্দেহ নেই, কেননা তিনি হাফেযুল হাদিস ছিলেন।

★ইমাম যাহাবী (رحمة الله) উল্লেখ করেন-

الإِمَامُ، المُحَدِّثُ، الصَّدُوْقُ، الحَافِظُ

‘‘তিনি হাদিসের ইমাম,মুহাদ্দিস,সত্যবাদী, হাফেযুল হাদিস ছিলেন।’’
[ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ৭/৩০৪ পৃ. ক্রমিক. ৯৭, যাহাবী,তারিখুল ইসলাম, ৪/৩৭৩ পৃ., ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী,তাহযিবুত তাহযিব, ৪/৯ পৃ.]
🔽
তিনি আরও উল্লেখ করেন-

وَقَالَ أَبُو حَاتِمٍ: مَحَلُّهُ الصِّدْقُ.

‘‘ইমাম আবু হাতেম (رحمة الله) বলেন, তার স্থান হচ্ছে সত্যবাদী বলা।’’
[ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ৭/৩০৪ পৃ. ক্রমিক. ৯৭, যাহাবী,তারিখুল ইসলাম, ৪/৩৭৩ পৃ., ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব,৪/৯ পৃ.]
🔽
তিনি আরও উল্লেখ করেন-

وَقَالَ بَقِيَّةُ: سَأَلْتُ شُعْبَةَ عَنْ سَعِيْدِ بنِ بَشِيْرٍ، فَقَالَ: ذَاكَ صَدُوْقُ اللِّسَانِ.

‘‘বাকিয়্যাত তিনি ইমাম শুবা (رحمة الله) কে সাঈদ ইবনে বাশীর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন,তিনি সত্যবাদী।’’
[ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ৭/৩০৪ পৃ. ক্রমিক. ৯৭, যাহাবী,তারিখুল ইসলাম, ৪/৩৭৩ পৃ.,ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব,৪/৯ পৃ.]

⏩তবে ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله) উল্লেখ করেন-

قال بقية عن شعبة ذاك صدوق اللسان وفي رواية صدوق اللسان في الحديث

‘‘তার থেকে অন্য বর্ণনায় রয়েছে,তিনি হাদিস বর্ণনায় সত্যবাদী।’’
[ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব, ৪/৯ পৃ.]
🔽
তিনি আরও উল্লেখ করেন-
قال عثمان الدارمي سمعت دحيما يوثقه

‘‘হযরত উসমান দারেমী (رحمة الله) বলেন,আমি আমি দুহাইম (رحمة الله) কে তাকে সিকাহ বলতে শুনেছি।’’
[ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব, ৪/৯ পৃ.]
🔽
তিনি আরও উল্লেখ করেন-
وقال أبو بكر البزار هو عندنا صالح ليس به بأس.
‘‘ইমাম আবু বকর বাজ্জার (رحمة الله) বলেন,আমাদের নিকট তিনি সৎ হাদিস বর্ণনাকারী,তার হাদিস গ্রহণ করতে কোন অসুবিধা নেই।’’
[ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব, ৪/৯ পৃ.]

ইমাম যাহাবী আরও উল্লেখ করেন-

وَقَالَ مَرْوَانُ الطَّاطَرِيُّ: سَمِعْتُ ابْنَ عُيَيْنَةَ يَقُوْلُ: حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بنُ بَشِيْرٍ، وَكَانَ حَافِظاً. وَقَالَ دُحَيْمٌ: يُوَثِّقُونَهُ، كَانَ حَافِظاً.

‘‘মারওয়ান আত-তাতারী বলেন,আমি সুফিয়ান ইবনে উয়ানাকে বলতে শুনেছি, সাঈদ ইবনে বাশীর হাফেযুল হাদিস ছিলেন। ইমাম দুহাইম (رحمة الله) বলেন, তিনি সিকাহ, হাফেযুল হাদিস।’’
[ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ৭/৩০৪ পৃ. ক্রমিক. ৯৭, যাহাবী, তারিখুল ইসলাম, ৪/৩৭৩ পৃ., ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব,৪/৯ পৃ.]
🔽
আল্লামা মুগলতাঈ (رحمة الله) উল্লেখ করেন-
ولما ذكره ابن شاهين في الثقات قال: قال شعبة بن الحجاج: هو مأمون خذوا عنه. وذكره الحاكم في الثقات وخرج حديثه في مستدركه، وقال: كان إمام أهل الشام في عصره إلا أن الشيخين لما يخرجاه.

‘‘ইমাম ইবনে শাহীন (رحمة الله) তাকে সিকাহ রাবীর তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করেছেন।ইমাম শু‘বা ইবনে হাজ্জাজ (رحمة الله) বলেন, তিনি নেককার আমরা তার থেকে হাদিস গ্রহণ করতাম, ইমাম হাকেম (رحمة الله) তাকে সিকাহ তে রেখেছেন এবং মুস্তাদরাকে তার হাদিস সংকলন করেছেন এবং বলেছেন, তিনি শাম দেশের তৎকালিন যুগের ইমাম ছিলেন যদিও বুখারী, মুসলিমে তার হাদিস সংকলন হয়নি।’’
[ইমাম ইবনে শাহীন,তারিখু আসমাউ সিকাত, ১/৯৭ পৃ. ক্রমিক. ৪৩২, মুগালতাঈ, ইকমালু তাহযিবুল কামাল, ৫/২৬৪ পৃ. ক্রমিক. ১৯১০]
🔽
তিনি আরও উল্লেখ করেন-
وقال البزار: سعيد بن بشير عندنا صالح ليس به بأس حسن الحديث

‘‘ইমাম বাজ্জার বলেন,সাঈদ ইবনে বাশার আমাদের নিকট সৎ ব্যক্তি, তার হাদিস গ্রহণ করতে কোন অসুবিধা নেই।তার হাদিস ‘সুন্দর’ পর্যায়ের।’’
[ইমাম মুগালতাঈ, ইকমালু তাহযিবুল কামাল, ৫/২৬৪ পৃ. ক্রমিক. ১৯১০]

তিনি আরও উল্লেখ করেন-

ولما ذكره ابن خلفون في الثقات

‘‘ইমাম ইবনে খালফুন (رحمة الله) তাকে সিকাহ রাবীর তালিকায় স্থান দিয়েছেন।’’
[ইমাম মুগালতাঈ, ইকমালু তাহযিবুল কামাল, ৫/২৬৪ পৃ. ক্রমিক. ১৯১০]

✊ইমাম হাকেম নিশাপুরী (رحمة الله) তার একটি হাদিস সংকলন করেন লিখেন-

حَدَّثَنَا أَبُو النَّضْرِ مُحَمَّدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ يُوسُفَ الْفَقِيهُ، ثنا عُثْمَانُ بْنُ سَعِيدٍ الدَّارِمِيُّ، ثنا أَبُو الْجُمَاهِرِ مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ التَّنُوخِيُّ، ثنا سَعِيدُ بْنُ بَشِيرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ، قَالَ….. هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ، وَسَعِيدُ بْنُ بَشِيرٍ إِمَامُ أَهْلِ الشَّامِ فِي عَصْرِهِ إِلَّا أَنَّ الشَّيْخَيْنِ لَمْ يُخَرِّجَاهُ [التعليق – من تلخيص الذهبي] ৯৯৫ – صحيح

‘‘…সাঈদ বিন বাশীর তাবেয়ী কাতাদা থেকে তিনি হাসান বসরী হতে তিনি সামুরা ইবনে জুনদুব (رضي الله عنه) হতে তিনি বলেন,…..। ইমাম হাকেম বলেন, এই হাদিসটির সনদ সহীহ। সাঈদ ইবনে বাসীর শাম দেশের তার সময়ের হাদিসের ইমাম ছিলেন, যদিও শাইখাইন তার থেকে হাদিস বর্ণনা করেননি। ইমাম যাহাবী (رحمة الله) একমত পোষণ করে বলেন, এটি সহীহ।’’
[ইমাম হাকেম, আল-মুস্তাদরাক, ১/৪০৩ পৃ. হা/৯৯৫, তিনি এ হাদিসকে সহীহ বলেছেন আর ইমাম যাহাবী (رحمة الله) তার সাথে একমত পোষণ করেছেন। আল-মুস্তাদরাক লিল হাকিম, ২/১২৫ পৃ. হা/২৫৩৬, ২/১৬২ পৃ. হা/২৫১, ৩/১৩০ পৃ. হা/৪৬১৭, ৩/৭৪৫ পৃ. হা/৬৭০৯, ৪/১৪১পৃ. হা/৭১৬২, ৪/১৭৭ পৃ. হা/৭২৭৯, হা/৮১০৪, ৪/৫০৬ পৃ. হা/৮৪২১]

✊উপরের আলোচনা থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণিত হল এ হাদিসটির সনদ সহীহ তাতে বিজ্ঞ হাদিস সমালোচকগণ একমত।

✳️আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) লিখেন-
ذَكَرَهُ السُّيُوطِيُّ وَلَهُ شَاهِدٌ مِنْ حَدِيثِ مَيْسَرَةَ الْفَخْرِ
‘‘ইমাম সুয়ূতি (رحمة الله) উল্লেখ করেছেন, হযরত মায়সারা (رضي الله عنه)-এর হাদিসটি এ হাদিসের শাওয়াহেদ (থাকায় হাদিসটিকে শক্তিশালী করেছে)।’’
[আল-আসরার, ২৭৩ পৃ.]

✌️ইমাম সাখাভী (رحمة الله) লিখেন-

وله شاهد من حديث ميسرة الفجر بلفظ: كنت نبيا وآدم بين الروح والجسد

‘‘এ হাদিসটির শাওয়াহেদ হাদিস রয়েছে হযরত মায়সারা (رضي الله عنه)-এর হাদিস, যেখানে রাসূল (ﷺ) বলেছেন, আমি তখনও নবী ছিলাম যখন আদম (আ.) রুহ এবং দেহের মাঝামাঝি ছিলেন।’’
[ইমাম সাখাভী, মাকাসিদুল হাসানা, ৫২১ পৃ. হা/৮৩৭]

✊আহলে হাদিসদের ইমাম শাওকানী লিখেন-
له شاهد صححه
‘‘এটির সহীহ শাওয়াহেদ রয়েছে।’’
[শাওকানী, ফাওয়াইদুল মাজমূআ,৩২৬ পৃ. হা/১৯]

♻️এ হাদিসের আরও ২-৩টি নির্ভরযোগ্য সূত্র রয়েছে।ইমাম বুখারী (رحمة الله)’র উস্তাদ ইমাম ইবনে সা‘দ (رحمة الله) [ওফাত. ২৩০ হি.] একটি হাদিস সংকলন করেন-

أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَطَاءٍ عَنْ سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ عَنْ قَتَادَةَ قَالَ: وَأَخْبَرَنَا عُمَرُ بْنُ عَاصِمٍ الْكِلابِيُّ. أَخْبَرَنَا أَبُو هِلالٍ عَنْ قَتَادَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ. صلى الله عليه وسلم : كُنْتُ أَوَّلَ النَّاسِ فِي الْخَلْقِ وَآخِرَهُمْ فِي الْبَعْثِ

‘‘হযরত কাতাদা (رضي الله عنه) হতে দুই ধারায় বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদেরকে জানানো হয়েছে, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এরূপ বলেছেন, সৃষ্টির মধ্যে আমিই প্রথম মানুষ এবং যদিও প্রেরিত হয়েছি সবার শেষে।’’
[ইমাম ইবনে সা‘দ, আত্-তবকাতুল কোবরা, ১/১৯৯ পৃ. দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন, ইবনে কাসির, বেদায়া ওয়ান নিহায়া, ২/৩৯৩ পৃ. দারু ইহ্ইয়াউত তুরাসুল আরাবী, বয়রুত, লেবানন, শিফা শরীফ, ১/১১৪ পৃ. কাসতাল্লানী, মাওয়াহেবে লাদুন্নীয়া, ১/৪২ পৃ.।]

⏺️আহলে হাদিসদের ইমাম, ইবনে তাইমিয়ার ছাত্র আল্লামা হাফেজ ইবনে কাসির (رحمة الله) [ওফাত. ৭৭৪হি.] এ হাদিস সংকলন করে লিখেন- وَهَذَا أَثْبَتُ وَأَصَحُّ -‘‘এই সনদটি অধিক প্রমাণিত ও অতি বিশুদ্ধ।’
[ইবনে কাসির, বেদায়া ওয়ান নিহায়া, ২/৩৯৩ পৃ.]

✊তাই আদম (عليه السلام)-এঁর-ই পূর্বেই রাসূল (ﷺ) কে সৃষ্টি করা হয়েছে; যা এই সহীহ হাদিস থেকে প্রমাণিত হল।তাই এই দিকেই ইশারা করে হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত,রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন-

قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَتَى وَجَبَتْ لَكَ النُّبُوَّةُ؟ قَالَ: وَآدَمُ بَيْنَ الرُّوحِ وَالجَسَدِ

‘‘রাসূল (ﷺ)‘র কাছে জানতে চাওয়া হলো যে, আঁপনি কখন নবুয়ত লাভ করেছেন? তিনি বলেন, আদম (عليه السلام) যখন রূহ ও দেহের মাঝামাঝি ছিলেন।’’
[তিরমিযি, আস্-সুনান, ৫/৫৮৫ পৃষ্ঠা, কিতাবুল মানাকিব, হাদিসঃ ৩৬০৯, তিনি বলেন হাদিসটি ‘হাসান’।]
🔽
আহলে হাদিস আলবানী সনদটিকে সহিহ বলেছেন।

⏹️আপনারাই দেখুন যেখানে ইমাম ইবনে সা‘দ (رحمة الله) এই হাদিসটির দুটি ধারায় বর্ণনা করেছেন আর প্রত্যেকটিই সনদই অনেক শক্তিশালী।হযরত কাতাদা (رضي الله عنه) এর আরেকজন ছাত্রও এই হাদিসটি তার থেকে বর্ণনা করেছেন।

★ইমাম ইবনে সালেহ শামী (رحمة الله) সংকলন করেন-
وروى ابن إسحاق عن قتادة مرسلا قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم، كنت أول الناس في الخلق وآخرهم في البعث

‘‘ইমাম ইবনে ইসহাক (رحمة الله) তিনি কাতাদা (رضي الله عنه) হতে মুরসাল সূত্রে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, সৃষ্টির মধ্যে আমিই প্রথম মানুষ এবং যদিও প্রেরিত হয়েছি সবার শেষে।’’
[ইমাম ইবনে সালেহ শামী, সবলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১/৬৮ পৃ.]
🔽
ইবনে ইসহাক সহীহ মুসলিমের রাবী এবং সত্যবাদী। (ইবনে হাজার, তাক্বরীবুত তাহযিব, ৪৬৭ পৃষ্ঠা, ক্রমিক. ৫৭২৫) বুঝা গেল কাতাদা থেকে এই হাদিসটি তিনটি সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। কাতাদা (رضي الله عنه) এর চতুর্থ সূত্রটি ইমাম ইবনে আদি (رحمة الله) মারফূ মুত্তাসিল সনদে সংকলন করেন-

حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ عَاصِمٍ، حَدَّثَنا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنا الوليد، حَدَّثَنا خُلَيْدُ بْنُ دَعْلَجٍ وَسَعِيدٌ، عَن قَتادَة عَنِ الْحَسَنِ، عَن أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيه وسَلَّم قَال: كُنْتُ أَوَّلَ الناس فِي الْخَلْقِ وَآخِرَهُمْ فِي الْبَعْثِ.

‘‘তিনি যথাক্রমে…জাফর ইবনু আহমাদ ইবনে আসেম থেকে তিনি হিশাম ইবনু আম্মার তেকে তিনি ওয়ালীদ থেকে তিনি তার দুই উস্তাদ খুলাইদ ইবনু দা‘লাজ এবং সাঈদ ইবনে বাশীর থেকে তিনি তাবেয়ী কাতাদা (رحمة الله) থেকে তিনি হাসান বসরী (رحمة الله) থেকে তিনি হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, নিশ্চয় রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, সৃষ্টির মধ্যে আঁমিই প্রথম মানুষ এবং যদিওবা প্রেরিত হয়েছি (নবীদের ক্ষেত্রে) সবার শেষে।’’
[ইমাম ইবনে আদি, আল-কামিল, ৩/৪৮৮-৪৮৯ পৃ. ক্রমিক. ৬০৬]

✊এই সনদটিও সহীহ লিগাইরিহী; কেননা এই সনদের তাবেয়ী কাতাদার দুই ছাত্র খুলাইদ এর হাদিসের মান ‘হাসান’ এবং সাঈদ ইবনে বাশীর এর হাদিসের মান ‘সহীহ’ পর্যায়ের।
⏬⏬ ⏬⏬ ⏬⏬
★২০৫. খুলাইদ ইবনে দা‘লাজের গ্রহণযোগ্যতা: অনেকে আবার রাবী খুয়াইদ কে নিয়ে আপত্তি তুলার সুযোগ খুঁজতে পারেন, তিনি মোটামুটি সিকাহ, তার হাদিসের মান কমপক্ষে ‘হাসান’ পর্যায়ের।

★ইমাম যাহাবী (رحمة الله) তার জীবনীতে উল্লেখ করেন-
وَقَالَ أَبُو حَاتِمٍ: هُوَ صَالِحٌ.

‘‘ইমাম আবু হাতেম (رحمة الله) বলেন, …তিনি হাদিস বর্ণনায় সৎ ব্যক্তি।’’
[যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ৭/১৯৬ পৃ. যাহাবী, মিযানুল ই‘তিদাল, ১/৬৬৩ পৃ. যাহাবী, তারিখুল ইসলাম, ৪/৩৫৪ পৃ. ইমাম মিয্যী, তাহযিবুল কামাল, ৮/৩০৯ পৃ.]
🔽
ইমাম মিয্যী (رحمة الله) উল্লেখ করেন-

وَقَال أَبُو حاتم الرازي : صالح.

‘‘ইমাম আবু হাতেম বলেন,তিনি হাদিস বর্ণনায় একজন সৎ ব্যক্তি।’’
[ইমাম মিয্যী, তাহযিবুল কামাল,৮/৩০৯ পৃ.]

✊তার হাদিসের মান ‘হাসান’ বলে বুঝা যায়।

★তবে ইমাম হাকেম নিশাপুরী (رحمة الله) তার দুটি সনদ সংকলন করেন; আর দুটোকেই সহীহ বলেছেন।যেমন-

حَدَّثَنَا مُكْرَمُ بْنُ أَحْمَدَ الْقَاضِي، ثنا أَحْمَدُ بْنُ عَلِيٍّ الْأَبَّارُ، ثنا إِسْحَاقُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ أَرْكُونُ الدِّمَشْقِيُّ، ثنا خُلَيْدُ بْنُ دَعْلَجٍ أَبُو عَمْرٍو السَّدُوسِيُّ، أَظُنُّهُ عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا …… هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ، وَلَمْ يُخَرِّجَاهُ

‘‘…খুলাইদ ইবনু দা‘লাজ তিনি কাতাদা (رحمة الله) থেকে তিনি আবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে……….ইমাম হাকেম নিশাপুরী (رحمة الله) বলেন,এই সনদটি সহীহ।’’

✊বুঝা যায় তার হাদিসের মান কমপক্ষে ‘হাসান’।
[ইমাম হাকেম, আল-মুস্তাদরাক, ৩/১৬২ পৃ. হা/৪৭১৫, তিনি তার আরেকটি হাদিসকে সহীহ বলেছেন।দেখুন-ইমাম হাকেম, আল-মুস্তাদরাক,৪/৮৫ পৃ. হা/৬৯৫৯]

✊সুতরাং এটা প্রমানিত তিঁনি তখনো নবী ছিলেন,যখন হযরত আদম (আঃ) পানি ও মাটিতে মিশ্রিত ছিলেন।
[আলোচনা চলবে…..]

♦রাসূল (ﷺ) কে “আল্লাহর নূর বা আল্লাহর যাতি নূর বা যাতি নূরের তাজাল্লী বা আল্লাহর যাতি নূরের জ্যোতি” বলা যাবে কি না?(৩৯ম পর্ব)

অনেকে বলেন কোরআনে নূর বলা হয়েছে কিন্তু নূরের তৈরী বলা হয়নি, আবার কেউ বলেন শুধু রুহ মোবারক নূর কিন্তু দেহমোবারক নয়,আবার কেউ বলেন সাদা মাটির তৈরী (নাউযুবিল্লাহ!) আজকে ইন-শা-আল্লাহ সে বিষয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো-[৩১ম অংশ]

⏹️⏹️⏹️আজকের আলোচনা⏹️⏹️⏹️

রাসূল (ﷺ) হলেন সর্বপ্রথম সৃষ্টি,যাঁকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি হতো না।[15th Part]

★২০৬: হযরত আদম (عليه السلام) এঁর সৃষ্টির চৌদ্দ হাজার বছর পূর্বে রাসূল (ﷺ)
আল্লাহর নিকট নূর হিসেবে বিদ্যমান ছিলেন:

মাওলানা মুতীউর রহমান তার ‘এসব হাদীস নয়’ গ্রন্থের ১৯৫ পৃষ্ঠায় উক্ত সহীহ হাদিস সম্পর্কে লিখেছেন-‘‘প্রখ্যাত মুহাদ্দিস শায়েখ আব্দুল্লাহ ইবনে সিদ্দীক আল-গুমারী (রহ.) এ সম্পর্কে লেখেন, ‘এটাও একটা জাল বর্ণনা’।’’

মাওলানা মুতীউর রহমানের ইলমের দৌড় দেখে আমি রীতিমত অবাক, তিনি আর কোনো দলিল পেলেন না উপস্থাপনের জন্য, কিছুদিন আগেরকার এক আলেমের অভিমতকেই একমাত্র সম্বল ভেবে বসে আছেন। অপরদিকে মাওলানা মুতীউর রহমান হাদিসটি বিকৃতি করে বর্ণনা করেছেন, যাতে জাল বানাতে সহজ হয়।তাই তিনি বাংলায় উদ্ধৃতি দিয়েছেন। তিনি হাদিসের ভাষ্য হিসেবে লিখেছেন, ‘‘হযরত আদম (আ.)-এঁর জন্মের চৌদ্দ হাজার বছর আগে আমি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নূর আকারে বিদ্যমান ছিলাম।’’

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! আপনারাই লক্ষ্য করুন যে, হাদিসে এসছে (قبل خلق آدم) হযরত আদম عليه السلام সৃষ্টির পূর্বে। মহান রব যেন এ সমস্ত ধোঁকাবাজদের থেকে আমাদের ঈমান ও আমলকে হেফাযত রাখুন।আমিন।

এবার হাদিসটির বিভিন্ন সূত্র আপনাদের সম্মুখে তুলে ধরার চেষ্টা করবো:

♻️♻️♻️♻️প্রথম সূত্র♻️♻️♻️♻️

★ইমাম আলী ইবনে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল মালেক হিমইয়ারী আল মারুফ আবুল হাছান ইবনে কাত্তান (رحمة الله) ওফাত ৬২৮ হিজরী তদীয় ‘কিতাবুল আহকাম’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন,

عن علي بن الحسين عن أبيه عن جده أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: كنت نورًا بين يدي ربي قبل خلق آدم بأربعة عشر ألف عام

“হযরত আলী ইবনে হুছাইন ইবনে আলী (رضي الله عنه) তাঁর পিতা ও দাদা সূত্রে বর্ণনা করেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন: আমি হযরত আদম عليه السلام সৃষ্টির ১৪ হাজার বছর পূর্বেই আল্লাহর কাছে নূর হিসেবে বিদ্যমান ছিলাম।”

[ইমাম ইবনে কাত্তান: কিতাবুল আহকাম, ১ম খণ্ড, ১৪২ পৃ;; শরফুল মোস্তফা, ১ম খণ্ড, ৩০৮ পৃ:; ইমাম কাস্তালানী: মাওয়াহেবুল্লাদুন্নিয়া, ১ম খণ্ড, ৭২ পৃ:; ইমাম যুরকানী: শরহে মাওয়াহেব, ১ম খণ্ড, ১৯৫ পৃ:; আনওয়ারে মুহাম্মদিয়া; কাশফুল খফা, ১ম খণ্ড, ২৩৮ পৃ:; সিরাতে হলবিয়া, ১ম খণ্ড, ৪৭ পৃ:; তাফছিরে রুহুল বয়ান, ২য় খণ্ড, ৪২৯ পৃ:; নশরুত্বিব, ২৬ পৃ:; জিকরে হাসীন, ৩০ পৃ:]

★ইমাম আজলূনী, ইমাম ইবনে সালেহী শামী, ইমাম কাস্তাল্লানী ও ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) সকলেই এভাবে হাদিসটি উল্লেখ করেছেন:

وفي أحكام ابن القطان فيما ذكره ابن مرزوق عن علي بن الحسين عن أبيه عن جده أن النبي صلى الله عليه وسلم قال…

“ইবনে কাত্তান তার আহকাম গ্রন্থে উল্লেখ করেন, যা ইবনে মারজুক (رحمة الله) হযরত আলী ইবনে হুছাইন (رضي الله عنه) এর পিতা ও দাদার সূত্রে উল্লেখ করেছেন।”
[ইমাম আজলূনী: কাশফুল খাফা; ইমাম কাস্তালানী: মাওয়াহেবুল্লাদুন্নিয়া, ১ম খণ্ড, ৯৪ পৃ:; ইমাম ইবনে ছালেহী: সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১ম খণ্ড, ৬৯ পৃ:; ইমাম  মোল্লা আলী: আল মাওরিদুর রাবী,৩৭পৃ.]

★হাদিসটি মূলত ইমাম ইবনে মারজুক (رحمة الله) এর কিতাবে সনদসহ রয়েছে। ইবনে মারজুক (رحمة الله) এর সম্পূর্ণ নাম হল: أَحْمَدُ بنُ مُحَمَّدِ بنِ القَاسِمِ المِصْرِيُّ “আহমদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে কাশেম আল মিছরী ”। তিনি ابْنُ مَرْزُوْقٍ ইবনে মারজুক (رحمة الله) নামে প্রসিদ্ধ। তার ইন্তেকাল ৪১৮ হিজরী।
[ইমাম যাহাবী: সিয়ারে আলামিন নুবালা, রাবী নং ২৫৬]

★তাবলিগ জামাতের নেতা আশরাফ আলী থানভী তার বিখ্যাত কিতাব “নুশর আত ত্বীব” এ বর্ননা করেছেন যে,

হযরত আলি বিন আল-হোসাইন [ ইমাম জয়নুল আবেদিন (رضي الله عنه) ] ওনার পিতা ইমাম হোসাইন (رضي الله عنه) থেকে তিনি ওনার পিতা হযরত আলি (رضي الله عنه) থেকে বর্ননা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আমি আমার প্রভুর সামনে আদম (আ) সৃষ্টিরও প্রায় ১৪ হাজার বছর পুর্বে একটা নুর হিসেবে বিদ্যমান ছিলাম।

এমন অনেক ধরনের বর্ননা প্রমান করে যে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর নুর সর্বপ্রথমে (earliest) সৃষ্টি হয়েছিল, কিছু কিছু বর্ননা (মানে হাদিস) বলে যে লাওহ-কলম, পৃথিবী- আকাশ এমনকি সবকিছুর পুর্বে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর নুর সৃষ্টি হয়েছিল।

রেফারেন্স : (মোল্লা আলী কারি (رحمة الله) : আল মাওরিদুর রাভী : ৭৮ পৃ 🙂

আশরাফ আলী থানবী : নুশরাত্বীব কিতাবে :

পুরু কিতাবে নুর সম্পর্কে অনেক হাদিস বর্ননা করেছেন। থানবীর আলোচিত সমস্ত নুর সম্পর্কিত সেগুলো দেখতে ক্লিক করুন : http://goo.gl/ZhX2mH

তাছাড়া এই উত্তর দেওবন্দের আন্তর্জাতিক website এর ফতোয়া দেখুন :-

Question: 3126 >Is the Prophet peace be upon him’s nur the first thing to be created? Also, was it created before Adam alayhis salam’s? Answer: 3126 Jan 29,2008 (Fatwa: 903/876=D)

ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়ার ওয়েবসাইটের লিঙ্ক –

http://darulifta-deoband.org/showuserview.do?function=answerView&all=en&id=3126

♻️♻️♻️♻️দ্বিতীয় সূত্র♻️♻️♻️♻️

★আল্লামা হুছাইন ইবনে মুহাম্মদ ইবনে হাছান দিয়ারবকরী (رحمة الله) [ওফাত ৯৬৬ হিজরী] তদীয় কিতাবে উল্লেখ করেন,
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ كنت نُورًا بَيْنَ يَدَيِ اللَّهِ تَعَالَى، قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ آدَمَ بِأَلْفَيْ عَامٍ،

“হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) নবী করিম (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, প্রিয় নবীজি (ﷺ) বলেছেন: আমি আদম عليه السلام সৃষ্টির ১ হাজার বছর পূর্বেও আল্লাহর কাছে নূর হিসেবে ছিলাম।”
[তারিখুল খামিস, ১ম খণ্ড, ২১ পৃ:]

★হাদিসটি অন্যান্য কিতাবে এভাবেও রয়েছে,
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كَانَتْ رُوحُهُ نُورًا بَيْنَ يَدَيِ اللَّهِ تَعَالَى، قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ آدَمَ بِأَلْفَيْ عَامٍ،

“হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন: আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এর রুহ মোবারক আল্লাহর কাছে আদম (عليه السلام) সৃষ্টির ১ হাজার বছর পূর্বে নূর হিসেবে ছিলেন।”
[কাজী আয়্যায: শিফা শরীফ, ১ম জি: ১৮২ পৃ:; সিরাতে হালভিয়া, ১ম খণ্ড, ৪৬ পৃ:; ইমাম ইবনে ছালেহী: সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১ম খণ্ড, ৬৯ পৃ:; ইমাম সুয়ূতী: খাসায়েসুল কুবরা, ১ম খণ্ড, ৬৬ পৃ:; শরফুল মুস্তফা, ১ম খণ্ড, ৩০৪ পৃ:]

এই হাদিস গুলো দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণ হয়, আদি পিতা হযরত আদম (আঃ) এর সৃষ্টির ১ হাজার বছর পূর্বেই আল্লাহর রাসূল (ﷺ) নূর হিসেবে ছিলেন। মাটির তৈরী প্রথম মানুষ হল হযরত আদম (عليه السلام), আর সেই আদম (عليه السلام) সৃষ্টির বহুকাল পূর্বে নূর হিসেবে সৃষ্টি ছিলেন।

♻️♻️♻️♻️তৃতীয় সূত্র♻️♻️♻️♻️

★বিখ্যাত হাদিস বিশারদ চার মাযহাবের অন্যতম ইমাম হযরত আহমদ ইবনে হাম্বল (رحمة الله) একটি হাদিসেপাক সংকলন করেছেন-

حَدَّثَنَا الْحَسَنُ قثنا أَحْمَدُ بْنُ الْمِقْدَامِ الْعِجْلِيُّ قثنا الْفُضَيْلُ بْنُ عِيَاضٍ قثنا ثَوْرُ بْنُ يَزِيدَ، عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ، عَنْ زَاذَانَ، عَنْ سَلْمَانَ قَالَ: سَمِعْتُ حَبِيبِي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: كُنَّا أَنَا وَعَلِيٌّ نُورًا بَيْنَ يَدَيِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ، قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ آدَمَ بِأَرْبَعَةَ عَشَرَ أَلْفَ عَامٍ

‘‘তাবেয়ী যাযান (رحمة الله) তিনি হযরত সালমান ফারসী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করতে শুনেছি, আমি ও আলী আদিপিতা আদম (আ.) সৃষ্টির চৌদ্দ হাজার বছর পূর্বে মহান রবের সমীপে নুর হিসেবে ছিলাম।’’
[ইমাম আহমদ, ফাযায়েলুস সাহাবা, ২/৬৬২ পৃ. হা/১১৩০, মুয়াস্সাতুর রিসালা, বয়রুত, লেবানন, প্রকাশ. ১৪০৩ হি.]

    ★★সনদ পর্যালোচনা★★
এ হাদিসটির সনদ সহীহ। কেননা, সনদের কোন রাবীই যঈফ নয়। ইমাম যাহাবী  আহমাদ ইবনু মিকদাম (رحمة الله) কে সিকাহ বলেছেন।
[যাহাবী, দিওয়ানুল দ্বুআফা, ১/১০ পৃ. ক্রমিক. ১০৮]

★ইমাম ইবনে হিব্বান তাকে সিকাহ রাবীর তালিকায় স্থান দিয়েছেন।
[ইবনে হিব্বান, কিতাবুস সিকাত, ৮/৩২ পৃ. ক্রমিক. ১২১২৪]

★ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله) বলেন, তিনি সহীহ বুখারীর রাবী।
[ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ৩/৫৪ পৃ. হা/২০৫৭, ৯/৩৩ পৃ. হা/৬৯৯৮]

তিনি আরও উল্লেখ করেন- بصري صدوق ‘‘তিনি বসরার অধিবাসি এবং সত্যবাদি ছিলেন।’’
[ইবনে হাজার, তাক্বরিবুত তাহযিব, ৮৫ পৃ. ক্রমিক. ১১০]

★আর সাওর ইবনে ইয়াযিদ সিহাহ সিত্তার রাবী।
[ইবনে হাজার তাক্বরীবুত তাহযিব, ১৩৫ পৃ. ক্রমিক.৮৬১, উদাহারণ- বুখারী, আস-সহীহ, ৪/৪২ পৃ. হা/২৯২৪, ৭/৮২ পৃ. হা/৫৪৫৯]

★আর ইমাম ফুযাইল ইবনে আয়্যায (ওফাত. ১৮৭ হি.) সম্পর্কে ইমাম ইবনে সা‘দ (رحمة الله) বলেন-
وكان ثقة ثبتا فاضلا عابدا ورعا كثير الحديث.

‘‘তিনি সিকাহ, দৃঢ় বর্ণনাকারী, মর্যাদাবান ব্যক্তি, ইবাদত পরায়ন, দুনিয়াবিমুখ, অধিক হাদিস বর্ণনাকারী।’’
[ইবনে সাদ, আত-তবকাতুল কোবরা, ৬/৪৩ পৃ. ক্রমিক. ১৬৪৮]

★ইমাম নাসাঈ (رحمة الله) বলেন- قَالَ النَّسَائِيُّ: ثِقَةٌ مَأْمُونٌ. -‘‘ইমাম নাসাঈ (رحمة الله) বলেন, তিনি সিকাহ, (দ্বীনের বিষয়ে) নিরাপদ ব্যক্তি।’’
[যাহাবী,তারিখুল ইসলাম, ৪/৬৯৪ পৃ.]

★তিনিও সহীহ বুখারী মুসলিমের রাবী।
[ইমাম ইবনে হাজার, তাক্বরীবুত তাহযিব, ৪৪৮ পৃ. ক্রমিক. ৫৪৩১]

✊কিন্তু কেউ কেউ ইমাম আহমদ (رحمة الله)-এর মত মুহাদ্দিসের উস্তাদ ‘হাসান’ কে যঈফ বলে একে উড়িয়ে দিতে চান। তাদের দাবী হলো ইমাম যাহাবী (رحمة الله) উল্লেখ করেছেন- قال أبو أحمد الحاكم: فيه نظر -‘‘ইমাম আবূ আহমদ হাকেম (رحمة الله) বলেন, তার বিষয়ে আপত্তি রয়েছে।’’
[মিযানুল ইতিদাল, ১/৫০৮ পৃ.]

✊আমি বলবো এ হাদিসটি অনেকগুলো সূত্র একত্রিত হওয়ায় এটি শক্তিশালী হয়েছে।

★এই হাদিসে প্রিয় নবীজি (ﷺ) এর সাথে হযরত আলী (رضي الله عنه) এর কথাও রয়েছে কারণ মাওলায়ে আলী (رضي الله عنه) হলেন পাক পাঞ্জাতনের অংশ। যেমন হাদিস শরীফে আছে,

أَخْبَرَنَا أَحْمَدُ بْنُ سُلَيْمَانَ قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ قَالَ: حَدَّثَنِي حَبَشِيُّ بْنُ جُنَادَةَ السَّلُولِيُّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: عَلِيٌّ مِنِّي، وَأَنَا مِنْهُ،
“হাবাসী ইবনে জুনাদা ছালুলী (رضي الله عنه) বলেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন: আলী আমার থেকে আমি তার থেকে।”
[ইমাম নাসাঈ: সুনানে কুবরা, হাদিস নং ৮০৯১; মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং ১৭৫১১; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১১৯; ইমাম তাবারানী: মুজামুল কবীর, হাদিস নং ৩৫১১; মুসনাদে ইবনে আবী শায়বাহ, হাদিস নং ৮৪৪]
অর্থাৎ আহলে বাইতের সবাই নবীর অংশ।

♻️♻️♻️♻️চতুর্থ সূত্র♻️♻️♻️♻️

ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি (رحمة الله) সংকলন করেন-

وَأخرج ابْن ابي عمر الْعَدنِي فِي مُسْنده عَن ابْن عَبَّاس ان قُريْشًا كَانَت نورا بَين يَدي الله تَعَالَى قبل ان يخلق آدم بألفي عَام يسبح ذَلِك النُّور وتسبح الْمَلَائِكَة بتسبيحه فَلَمَّا خلق الله آدم ألْقى ذَلِك النُّور فِي صلبه قَالَ رَسُول الله ﷺ فأهبطني الله إِلَى الأَرْض فِي صلب آدم وَجَعَلَنِي فِي صلب نوح وَقذف بِي فِي صلب إِبْرَاهِيم ثمَّ لم يزل الله ينقلني من الأصلاب الْكَرِيمَة والأرحام الطاهرة حَتَّى أخرجني من بَين أَبَوي لم يلتقيا على سفاح قطّ-

‘‘হযরত ইবনে আবী ওমর আদনী (رضي الله عنه)তার “আল-মুসনাদ” গ্রন্থে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে রেওয়ায়েত করেন যে,  নিশ্চয়ই কুরাইশ [নূরে মুহাম্মাদী (ﷺ)] আদম সৃষ্টির দু‘হাজার বছর পূর্বে আল্লাহর সামনে একটি নূর আকারে বিদ্যমান ছিল। এই নূর যখন তাসবীহ পাঠ করত,  তখন ফেরেশতারাও তাঁর সঙ্গে তাসবীহ পাঠ করতো। আল্লাহ্ তা‘য়ালা আদম কে সৃষ্টি করে এই নূর তাঁর ঔরসে রেখে দিলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আরও বলেন : এরপর আল্লাহ্ আমার নূর আদমের ঔরসের মাধ্যমে পৃথিবীতে নামালেন। তারপর হযরত নূহ এর ঔরসে স্থানান্তর করলেন। অতঃপর হযরত ইব্রাহীম (عليهم الصلاة والسلام)-এর ঔরসে।

★এমনিভাবে আল্লাহ্ পাক আমাকে সম্মানিত বান্দাদের ঔরসে এবং পবিত্রাত্মা নারীদের গর্ভে স্থানান্তর করতে থাকেন। অবশেষে আমার পিতা মাতার কাছে আগমন করান,  যাদের মাধ্যমে দুনিয়ায় আগমন করি। আমার পিতৃপুরুষদের মধ্যে কেউ কখনও ব্যভিচারের ভিত্তিতে সঙ্গম করেনি।’’
[ইমাম সুয়ূতি : খাসায়েসুল কুবরা,  ১/৬৯ পৃ. হা/১৭১,  অনুরূপভাবে বর্ণনা করেছেন, ইমাম কাজী আয়াজ : শিফা শরীফ : দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ : ১/১৭ পৃ. শায়খ ইউসুফ নাবহানী : জাওয়াহিরুল বিহার : ১/২১ পৃ. ইমাম ইবনে সালেহ,  সবলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১/৬৯ পৃ. বুরহান উদ্দিন হালবী, সিরাতে হালবিয়্যাহ, ১/৪৬ পৃ. ,  জুরকানী, শরহুল মাওয়াহেব, ১/৯৫ পৃ., ইসমাঈল হাক্কী, তাফসীরে রুহুল বায়ান, ২/৩৭০ পৃ. সূরা মায়েদা, আয়াত.১৭]

    ♻️♻️♻️♻️৫ম সূত্র♻️♻️♻️♻️
ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (১৯৪- ২৫৬ হিজরী) থেকে ৬০ বছরের বড়, সেই সাথে ওস্তাদও বটে। সূতরাং আশা করা যায় বিরোধী যারা করেন এখানেও বিরোধীতা করে হাসির পাত্র হবেন না। হাদীস শরীফ খানা সনদ সহ বর্ননা করা হলো,

حدثنا الحسن قثنا أحمد بن المقدام العجلي قثنا الفضيل بن عياض قثنا ثور بن يزيد عن خالد بن معدان عن زاذان عن سلمان قال سمعت حبيبي رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول : كنت انا وعلي نورا بين يدي الله عز و جل قبل ان يخلق آدم بأربعة عشر ألف عام فلما خلق الله آدم قسم ذلك النور جزءين فجزء أنا وجزء علي عليه السلام

অর্থঃ- “হযরত সালমান (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি শুনেছেন যে প্রিয়নবী (ﷺ) বলেছেন, আদম (আঃ) সৃষ্টির ১৪ হাজার বছর পূর্বে আমি (ﷺ) এবং আলী (رضي الله عنه) আল্লাহর সম্মুখে (বা নিকটে) একটা নূর হিসেবে বিদ্যমান ছিলাম। উক্ত “নূর মুবারক” হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার সৃষ্টি হওয়ার চৌদ্দ হাজার বৎসর পূর্বে মহান আল্লাহ পাক উনার তাসবীহ ও পবিত্রতা বর্ণনায় মশগুল ছিল। যখন হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হলো তখন উক্ত “নূর মুবারক” দুই ভাগে ভাগ করা হলো।”

তথ্যসূত্রঃ

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলঃ ফাদ্বায়েলুছ ছাহাবা, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি, ৬৬৩ পৃষ্ঠা : হাদীছ নং ১১৩০,
মুসনাদুল ফেরদাউস ৩য় জিঃ ২৮৩ পৃষ্ঠা,
মুখতাছারু তারিখুত দিমাষ্ক ৫/৩৭৭,
মানাকিবে আলী ইবনে আবী তালিব ১/১৪৫
উক্ত হাদিস বিভিন্ন সনদে নিম্বলিখিত রাবীগন কর্তৃক বর্ণিতঃ

হযরত আলী ইবনে আবী তালিব (رضي الله عنه)
হযরত ইমাম হাসান ইবনে আলী (رضي الله عنه)
হযরত সালমান মুহাম্মদী (رضي الله عنه)
হযরত আবু যর গিফারী (رضي الله عنه)
হযরত জাবির বিন আব্দুল্লাহ আনসারী (رضي الله عنه)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه)
হযরত আনাস বিন মালিক (رضي الله عنه)
হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه)
উক্ত হাদিসের সনদ ও ইসনদ বর্ননাকারীর তালিকা :

the hadis is transmitted by many genres of narrators including –

i) Sahaabah (Companions of the Holy Prophet s.a.w.a.)
ii) Taabe’een (Generation after companions who did not see the Holy Prophet s.a.w.a.)
iii) Huffaaz (Memorizers of the Holy Quran)

iv) Ulama (Scholars)
The following is a category-wise list of transmitters:

i) Companions:
Among the revered companions who narrated the tradition:

Ameerul Momineen Ali b. Abi Taalib (a.s)
Following scholars have recorded the tradition from him:

Saalehaani
Kala’ai
Muhammad b. Jafar
Wasabi
Waa’iz Hirvi
Muhammad Sadr Aalim
Imam Husain b. Ali (a.s)
Following scholars have chronicled the tradition from him:

Aasimi
Khaarazmi
Matarzi
Shahabuddin Ahmad
Salman Muhammadi (r.a)
Following scholars have documented this tradition from him:

Ahmad b. Hanbal. (Sibt-e-Jauzi has narrated this tradition in his book from Ahmad b. Hanbal.)
Abdullah Ibn Ahmad
Ibne Maghazili
Sheruyeh Daylami
Natanzi
Shahardar Daylami
Khateebe Khaarazmi
Ibn Asir
Hamwini
Taalibi
Hamadani
Ganji Shaafe’ee
Tabari
Wasabi
Hirvi
Abu Zarr Ghaffari (r.a.)
Ibne Maghaazili has narrated from him.

Jaabir b. Abdillah al-Ansaari (r.a.)
Ibne Maghaazili has narrated from him.

Abdullah b. Abbas (r.a.)
Following scholars have narrated this tradition from him:

Ibn Habeeb Baghdadi
Natanzi
Ganji Shaafe’ee
Hamwini
Zarandi
Shahabuddin Ahmad
Jamaal Muhaddis
Abu Hurairah
Hamwini has narrated from him.

Anas b. Maalik
Aasimi has narrated from him.

i) The Taabe’een who narrated Hadees-e-Nur:
Imam Ali b. Husain b. Abi Taalib (a.s)
Zadaan Abu Umar Kandi exp 82 AH
Abu Usman Nahdi
Saalim b. Abu Ja’ad Ashja’ee exp. 98 or 100 AH
Abu Zubair Muhammad b. Muslim b. Tadarrrus Asadi Makki exp 126 AH
Ikramah b. Abdullah Burairi exp 180 AH
Abdul Rahman b. Yaqub Johni Madani
Abu Ubaidah Hameed b. Abi Hameed Taweel Basri
ii) Among the memorizers of the Holy Quran who narrated Hadees-e-Nur are:
Ahmad b. Hanbal Shaybaani exp 241 AH
Abu Haatim Muhammad b. Idris exp 277 A.H
Abdullah b. Ahmad b. Hanbal exp 290 AH
Ibn Mordowayh Abu Bar Ahmad b. Moosa Isfahaani exp 410 AH
Abu Naeem Ahmad Ibn Abdullah Isfahaani exp 430 AH
Ibn Abdul Barr Yusuf Ibn Abdullah Numairi Qurtubbi exp 463 AH
Khateeb-e-Baghdadi
Daylami
Khaaarazmi
Ganji Shaafe’ee
Tabari
Hamwini
NOTE :

Sibt ibne Jauzi’s reply to those who consider the hadis as weak

Sibt ibne Jauzi who is considered a high principled narrator by many Sunni scholars like Khaarazmi, Zahabi, Muhammad b. Ali Dawoodi – the teacher of Suyooti, Ibn Khallekaan among others, has documented Hadis-e-Nur in his book Tazkerah al-Khawaas (p. 22) strongly refuting the arguments of the skeptics who deem it as weak.

✊যারা আমাদের প্রান প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উঁনাকে “নূর” হিসাবে মানতে পারেন না। যারা বলেন নূরের কোন সহীহ হাদীস শরীফ নাই,ইমাম কুস্তালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আগে কেউ নূরের হাদীস বর্ননা করেন নাই। তাদের জন্য এই দলীল। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি (১৬৪-২৪১ হিজরী) রচিত ফাদ্বায়েলুছ সাহাবা কিতাবে একটা হাদীস শরীফ আছে।বয়সে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (১৯৪- ২৫৬ হিজরী) থেকে ৬০ বছরের বড়,সেই সাথে ওস্তাদও বটে।হাদীস শরীফ খানা সনদ সহ বর্ননা করা হলো:

حدثنا الحسن قثنا أحمد بن المقدام العجلي قثنا الفضيل بن عياض قثنا ثور بن يزيد عن خالد بن معدان عن زاذان عن سلمان قال سمعت حبيبي رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول : كنت انا وعلي نورا بين يدي الله عز و جل قبل ان يخلق آدم بأربعة عشر ألف عام فلما خلق الله آدم قسم ذلك النور جزءين فجزء أنا وجزء علي عليه السلام

অর্থঃ- “হযরত সালমান ফার্সী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা হতে বর্ণিত,  হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,আঁমি এবং হযরত আলী আলাইহিস সালাম মহান আল্লাহ পাক উঁনার নিকট “নূর“ হিসেবেই অবস্থান করছিলাম।উক্ত “নূর মুবারক”  হযরত আদম আলাইহিস সালাম উঁনার সৃষ্টি হওয়ার চৌদ্দ হাজার বৎসর পূর্বে মহান আল্লাহ পাক উঁনার তাসবীহ ও পবিত্রতা বর্ণনায় মশগুল ছিল। যখন হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হলো তখন উক্ত “নূর মুবারক” দুই ভাগে ভাগ করা হলো।”

[কিতাব: ফাদ্বায়েলুছ ছাহাবা, লেখক: ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি, ৬৬৩ পৃষ্ঠা : হাদীছ নং ১১৩০, ফেরদাউস ৩য় জিঃ ২৮৩ পৃষ্ঠা, মুখতাছারু তারিখুত দিমাষ্ক ৫/৩৭৭, মানাকিবে আলী ইবনে আবী তালিব ১/১৪৫]

✌আবার এরকম বর্ননাও রয়েছে।হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আদমের সৃষ্টির চার হাজার বছর আগে আল্লাহর সান্নিধ্যে আঁমি আর আলী একই নূর ছিলাম।তারপর যখন আল্লাহ আদমকে সৃষ্টি করলেন,তখন সেই নূরকে দুই টুকরা করলেন তার এক টুকরো হলাম আমি আর অপর টুকরো হল আলী।
[ফাদায়িলুস সাহাবা ২:৬৬২/১১৩০, আর রিয়াদুন নাদরাহ  ৩/১২০]

✌আবার এরকমও বর্নিত রয়েছে।নবী(ﷺ)-এঁর নিকট থেকে বহুল বর্ণিত যে, তিঁনি বলেছেন, “আদম সৃষ্টির পূর্বে আঁমি এবং আলী একত্রে আল্লাহর নিকট এক খণ্ড নূর হিসেবে অবস্থান করতাম । অতঃপর যখন আল্লাহ হযরত আদমকে সৃষ্টি করলেন,তখন তিঁনি সেই নূরকে দু’খণ্ডে বিভক্ত করলেন।এক খণ্ড আঁমি এবং অপরটি আলী।
[আর রিয়াদুন নাদেবরা,২য় খণ্ড, পৃঃ-১৬৪; মিযানুল এতেদাল, যাহাবী,খণ্ড-১ পৃঃ-২৩৫; তারিখে বাগদাদ, খণ্ড-৬, পৃঃ-৫৮]

✌আল্লামা সুয়ূতি তার বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থে সূরা বাকারার নিম্নোক্ত আয়াতঃ

فَتَلَقَّى آدَمُ مِنْ رَبِّهِ كَلِمَاتٍ فَتَابَ عَلَيْهِ إِنَّهُ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ

অর্থাৎঃ অতঃপর আদম তাঁর প্রতিপালকের নিকট থেকে কতগুলো শব্দ (কালেমাত) শিখলেন, ফলে সেগুলোর মাধ্যমে তিঁনি তওবা করেন । নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবা গ্রহনকারী ও অনুগ্রাহী।
[সূরা আল বাকারা,আয়াত নং- ৩৭]
এর ব্যাখ্যায় বলেছেনঃ

و اخرج ابن النجار عن ابن عباس قال: سألت رسول الله (ص) عن الکلمات التی تلقاها آدم من ربه فتاب علیه، قال: سأل بحق محمد و علی و فاطمة و الحسن و الحسین الا تبت علی فتاب علیه

অর্থাৎঃ ইবনে নাজ্জার ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেছেন যে তিনি বলেছেনঃ আমি আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-কে ঐ শব্দাবলী (কালেমাত) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, যা হযরত আদম আল্লাহর কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহন করেছিলেন যার ফলে তার তওবা কবুল হয়েছিল।নবী (ﷺ)-প্রতিত্তোরে বলেনঃ আদম (আ.), মুহাম্মদ,আলী,ফাতেমা, হাসান, হুসাইনের উছিলা ধরে আল্লাহর কাছে তওবা করেন,যার ফলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করে নেন ।
[কানযুল উম্মাল,১ম খণ্ড,পৃঃ ২৩৪]

✌বিভিন্ন প্রসিদ্ধ হাদীস গ্রন্থে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণিত আছে যে,তিঁনি বলেছেন,আঁমি ও আলী একই বৃক্ষের দু’টি শাখা ।‘মুসতাদরাক আস সহিহাইন’ গ্রন্থে নিম্নলিখিতভাবে এ ধরনেরই একটি হাদীস লিপিবদ্ধ আছেঃ জাবের বিন আব্দুল্লাহ বলেছেন,হে আলী,বিশ্বের অন্যান্য মানুষ পৃথক পৃথক বৃক্ষ থেকে সৃষ্টি হয়েছে আর আমি এবং তুমি একই বৃক্ষ থেকে সৃষ্টি।
[মুসতাদরাক আস সাহিহাইন,২য় খণ্ড, পৃঃ২৪১, কানযুল উম্মাল,৬ষ্ট খণ্ড,পৃঃ-১৫৪;যাখায়েরুল উকবা,পৃঃ-১৬]

✌সহি আল বুখারীতে ‘সুলহ’ অধ্যায়ে (کیف یکتب) ‘কাইফা ইয়াকতুব’ শীর্ষক পাঠে (বাব) বর্ণিত আছে যে,নবী (ﷺ)-আলীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন,
انت منی و انا منک
অর্থাৎঃ (হে আলী) তুমি আঁমা হতে আর আঁমি তোমা হতে।

✌রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-বলেছেনঃ
أنْتَ مِنِّي وَ أَنَا مِنْكَ.
তুমি আঁমা থেকে আর আঁমি তোমা থেকে।

[সহীহ বুখারী ৪:২২, ৫:৮৭, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৫/৩৭১৬, মাসাবিহুস সুন্নাহ ৪:১৭২/৪৭৬৫ ও ১৮৬/১০৪৮,তারীখে বাগদাদ ৪:১৪০]

  ♻️♻️♻️♻️৬ষ্ঠ সূত্র♻️♻️♻️♻️
বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকার আল্লামা ইমাম আহমদ কুস্তালানী (রহঃ) তাঁর সুপ্রসিদ্ধ কিতাব মাওয়াহেবে লাদুনিয়ায় হযরত ইমাম জয়নাল আবেদীন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে,তিনি তাঁর পিতা হযরত ইমাম হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে,তিনি তাঁর পিতা হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে,তিনি রাসুলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন,নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,”আঁমি হযরত আদম আলাইহিস সালাম সৃষ্টির ১৪০০০ বছর পূর্বে আল্লাহর নিকট নুর হিসাবে বিদ্যমান ছিলাম।”
      *****দলিল*****
*১. মাওয়াহেবে লাদুনিয়া,১ম খন্ড,পৃষ্ঠা-৯
*২. যুরকানী শরীফ,১ম খন্ড, পৃষ্ঠা-৪৬
*৩. সিরাতে হালাবিয়া,১ম খন্ড, পৃষ্ঠা-৩৭
*৪. হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামিন পৃষ্ঠা- ২৮
*৫. আনোয়ারে মুহাম্মদীয়া, পৃষ্ঠা- ০৯
*৬.ফতওয়ায়ে হাদিসিয়া,পৃষ্ঠা -৫১
*৭. ইমাম আযলুনী, কাশফুল খফা: ১/২৩৭
*৮.ইবনু কাছির, আল-বেদায়া ওয়ান-নেহায়া: ২/৪০২
*৯. সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফি সিরাতি খাইরিল ইবাদ,১ম খন্ড, ৬৯পৃষ্ঠা
*১০. নশরুত ত্বীব,৫ম পৃষ্ঠা

নোটঃ পৃথিবীর ১০০০ বছর ঐ জগতের একদিন।অংকের হিসাবে ৫১১০০০০০০০ বৎসর হয়।

★২০৭. ইবনে আসাকির উদ্ধৃত করেন হযরত সালমান ফারিসী (রা:) থেকে।তিনি বলেন : “হযূর পূর নূর প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)  এঁর কাছে জিবরীল আমীন (আ:) এসে পৌঁছে দেন আল্লাহর বাণী : ‘আঁমি যদিও ইব্রাহিম (আঃ) কে খলিল বানিয়েছি, কিন্তু আঁপনাকে বানিয়েছি ‘হাবীব’।আঁমি যদিও মূসা (আঃ) এঁর সাথে দুনিয়াতে কথা বলেছি, আঁপনার সাথে কথা বলেছি আসমানে।আঁমি ঈসা (আঃ) কে রুহুল কুদ্দুস থেকে সৃষ্টি করলেও আঁপনাকে করেছি সমগ্র সৃষ্টিজগতের ২০০০ হাজার বছর পূর্বে।আঁপনার কদম এমন জায়গায় পৌঁছেছে যেখানে আঁপনার পূর্বে কারো কদম পৌঁছেনি, ভবিষ্যতেও পৌঁছবে না।আঁমি আদম (আঃ) কে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করলেও আঁপনার মাধ্যমে ঘটিয়েছি নাবুয়্যাত ক্রমধারার পরিসমাপ্তি।

(হে রাসূল) আঁপনার চেয়ে অধিক সম্মানিত আর কাউকেই আঁমি সৃষ্টি করি নি।ক্বিয়ামাত দিবসে আঁমার আরশের ছায়া আঁপনার উপর প্রসারিত হবে। প্রশংসার জয়মুকুট আঁপনার নূরানী মস্তকে শোভা পাবে। আঁমি আঁপনার নাম আঁমার নামের সাথে মিলিয়ে রেখেছি।আঁমি বিশ্বজগতও এর মধ্যে যা কিছু আছে তার সবই সৃষ্টি করেছি যাতে তারা জানতে পারে আঁপনার মহান মর্যাদা সম্পর্কে।আঁমি এই বিশ্বজগত সৃষ্টি করতাম না, যদি আঁপনাকে সৃষ্টি না করতাম’।”

         *******দলিল********
*১. ইবনূ আসাকির : তারীখে দামেস্ক; ৩/৫১৭।
*২. আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী : মওদ্বুআতুল কবীর; পৃষ্ঠা ১০১।
*৩. ইমাম যুরকানী : শরহে মাওয়াহিব; ১/১৮২।
*৪. শায়খ ইউসূফ নাবাহানী : যাওয়াহিরুল বিহার; ১/২৮৯।
*৫. ইমাম কাজী আয়াজ : শিফা শরিফ; ২/১০৫।

★তাছাড়া আরও দেখতে পারেন আদম (আ:) সৃষ্টির ২ হাজার পুর্বে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এঁর রুহ মোবারক নুরের আকৃতিতে সৃষ্টির বর্ননা-ইমাম কাজী আয়াজ (রহ):  শিফা শরীফের ৮৯ পৃষ্টা,মোল্লা আলী কারী (রহ:)-আল মাওরিদুর রাভী:

✊উপরের আলোচনা থেকে আমরা বুঝলাম যে, এ হাদিসটির অনেকগুলো সূত্র হওয়ার কারনে বিষয়টি সুস্পষ্ট প্রমাণিত।তাই এটি অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।

♦রাসূল (ﷺ) কে “আল্লাহর নূর বা আল্লাহর যাতি নূর বা যাতি নূরের তাজাল্লী বা আল্লাহর যাতি নূরের জ্যোতি” বলা যাবে কি না?(৪০ম পর্ব)

অনেকে বলেন কোরআনে নূর বলা হয়েছে কিন্তু নূরের তৈরী বলা হয়নি, আবার কেউ বলেন শুধু রুহ মোবারক নূর কিন্তু দেহমোবারক নয়,আবার কেউ বলেন সাদা মাটির তৈরী (নাউযুবিল্লাহ!) আজকে ইন-শা-আল্লাহ সে বিষয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো-[৩২ম অংশ]

⏹️⏹️⏹️আজকের আলোচনা⏹️⏹️⏹️

এপর্যায়ে আলোচনা করবো নূরে মোহাম্মদী (ﷺ) স্থানান্তর ও মায়ের গর্ভেও নূর ছিলেন এবং পৃথিবীতে আগমনের ধরন 1st part:

★২০৭. হযরত আদম (আঃ)-এঁর অন্ধকার দেহে রুহ প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁর ললাটে হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (ﷺ)-এঁর নূর মোবারকের অংশবিশেষ স্থাপন করা হয় এবং এতে দেহের ভেতরে আলোর সৃষ্টি হয়। তখনই হযরত আদম (আঃ) মানবরূপ ধারণ করেন এবং হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ পাঠ করেন।আমাদের প্রিয় নবী (ﷺ) সৃষ্টি হয়েই প্রথমে পাঠ করেছিলেন আলহামদুলিল্লাহ।তাই আল্লাহ তায়ালা মানব জাতির প্রথম প্রতিনিধি হযরত আদম (আঃ) এবং সমগ্র বিশ্ব জগতের প্রতিনিধি হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা(ﷺ)-এঁর প্রথম কালাম ‘আলহামদুলিল্লাহ’ দিয়ে কোরআন মাজিদ শুরু করেছেন(তাফসীরে নঈমী)।

এভাবে ঐ জগতের একহাজার আট কোটি বছর পর মোহাম্মদী নূর হযরত আদম (আঃ)-এঁর দেহে স্থানান্তরিত হয়। প্রথমে ললাটে, তারপর ডান হাতের শাহাদত অঙ্গুলিতে এবং পরে পৃষ্ঠদেশে সেই নূরে মোহাম্মদীকে (ﷺ) স্থাপন করা হয়।এরপর জান্নাতে, তারপর দুনিয়াতে পাঠানো হয় সে নূরকে।১০৬ মোকাম পাড়ি দিয়ে তিনি অবশেষে মা আমেনার উদর হতে মানব সূরতে ধরাধামে আত্মপ্রকাশ করেন।
[১০৬ মাকামের বর্ণনা সুন্নীবার্তা মিলাদুন্নবী সংখ্যায় দেখুন]

★২০৮. হযরত আদম (আঃ) কে বলা হয় প্রথম বশর অর্থাৎ প্রকাশ্য দেহধারী মানুষ।এঁর পূর্বে কোন বশর ছিল না।রাসূল (ﷺ) তো আদম নবী (আঃ) এঁরও লক্ষ কোটি বছর পূর্বে পয়দা হয়েছিলেন।তখন তিঁনি বশরী সূরতে ছিলেন না এবং তাঁর নামও বশর ছিলনা।বশরী সূরত তো দুনিয়ায় এসে প্রকাশ পেয়ে ছিল।এটা অনুধাবন করা ঈমানদারের কাজ (জা’আল হক বশর প্রসংগ)।তাই রাসূল(ﷺ) কে “ইয়া বাশারু “বলে ডাকা হারাম।(১৮ পারা)।হযরত আদম (আঃ) সৃস্টির পূর্বে নবিজী ছিলেন নূরে মোজাররাদ এবং নবী খেতাবে ভূষিত।মৌলুদে বরজিঞ্জি নামক বিখ্যাত আরবী কিতাবের লেখক ইমাম ও মোজতাহেদ আল্লামা জাফর বরজিঞ্জি মাদানী (رحمة الله عليه)লিখেন- “যখন আল্লাহ তায়ালা হাকিকতে মোহাম্মদী প্রকাশ করার ইচ্ছে করলেন- তখন হযরত আদম (عليه السلام) কে পয়দা করলেন এবং তাঁর ললাটে হযরত মোহাম্মদ [ﷺ]-এঁর পবিত্র নূর স্থাপন করলেন।”

★২০৯. আহ্‌সানুল মাওয়ায়েয কিতাবে উল্লেখ আছে, একদিন আল্লাহর কাছে হযরত আদম (عليه السلام) নূরে মোহাম্মদী [ﷺ] দর্শনের জন্য প্রার্থনা করলেন।তখন আল্লাহ তায়ালা হযরত আদম (عليه السلام)-এঁর ডান হাতের শাহাদাত অঙ্গুলীর মাথায় নূরে মোহাম্মদী প্রদর্শন করালেন।মধ্যমা অঙ্গুলীতে হযরত আবু-বকর, অনামিকায় হযরত ওমর,কনিষ্ঠায় হযরত ওসমান ও বৃদ্ধাঙ্গুলীতে হযরত আলী (رضي الله عنهم) এই সাহাবী চতুষ্ঠয়ের দেদীপ্যমান নূর ও প্রদর্শন করালেন। অতঃপর সেই নূর স্থাপন করলেন হযরত আদম (عليه السلام)-এঁর পৃষ্ঠদেশে,যাঁর দেদীপ্যমান ঝলক চমকাতো তাঁর ললাটে।

★আল্লামা ইউসুফ নাবহানীর আনওয়ারে মোহাম্মদী নামক জীবনী গ্রন্থের ১৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে।
لَمَّا خَلَقَ اللهُ ﺁدَمَ جَعَلَ ذَالِكَ النُّوْرُ فِى ظَهْرِه فَكَانَ يَلْمَعُ فِى جَبِيْنِــه

অর্থঃ “যখন আল্লাহ তায়ালা হযরত আদম (আঃ) কে পয়দা করলেন,তখন ঐ নূরে মোহাম্মদী [ﷺ] তাঁর পৃষ্টে স্থাপন করলেন। সে নূর তাঁর ললাটদেশে চমকাতো।”

★২১০.কাজী ইয়াজ (রহ:) এর শিফা কিতাবে বর্নিত হয়েছে:

عن عباس أن النبي صلى الله عليه وسلم كانت روحه نورا (وفي رواية كانت قريش نورا ) بين يدى الله تعالى قبل أن يخلق آدم بألفى عام يسبح ذلك النور وتسبح الملائكة بتسبيحه فلما خلق الله آدم ألقى ذلك النور في صلبه فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم (فأهبطني الله إلى الأرض في صلب آدم وجعلني في صلب نوح وقذف بى في صلب إبراهيم ثم لم يزل الله تعالى ينقلني من الأصلاب الكريمة والأرحام الطاهرة حتى أخرجنى
من أبوى لم يلتقيا على سفاح قط، 

হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,রাসূল (ﷺ) এঁর রূহ মোবারক আদম (আ:) সৃষ্টি দু’হাজার বছর পূর্বে আল্লাহ তায়ালার সামনে নূর হিসেবে ছিল।ঐ নূর আল্লাহ তায়ালার তাসবীহ পড়তেছিল এবং তার দেখাদেখি ফেরেশতারা আল্লাহ তায়ালার তাসবীহ পড়তেছিল।অত:পর আল্লাহ তায়ালা যখন আদম (আ:) কে সৃষ্টি করলেন ঐ নূর তার মেরুদন্ডে দিয়ে দিলেন।রাসূল (ﷺ) বলেন, অত:পর আল্লাহ তায়ালা আঁমাকে আদমের মেরুদন্ডে করে দুনিয়ায় নামান এবং বংশানুক্রমে আঁমাকে নূহ (আ:) এঁর মেরুদন্ডে দেয়া হয়।এরপরে আঁমাকে ইবরাহীম (আ:) এঁর মেরুদন্ডে নিক্ষেপ করা হয়।এভাবে আল্লাহ তায়ালা আঁমাকে সম্মানিত মেরুদন্ড ও পবিত্র রেহেমের মাধ্যম করে স্থানান্তর করেন এমনকি আঁমার পিতামাতার মাধ্যমে আঁমাকে জগতে আবির্ভাব ঘটান।তারা কখনো অনাচার করেনি।”
[শরহুশ শেফা লি আলী আল কারী,১ম খন্ড,পৃ:২০৬]

✌তাফসিরে দুররে মানসুরে রয়েছে-

اخرج ابن ابى عمر العدنى عن ابن عباس ان قريشا كانت نورا بين يدى الله تعالى قبل ان يخلق الخلق بالفى عام يسبح ذلك النور وتسبح الملائكة بتسبيحه- فلما خلق الله ادم عليه السلام القى ذلك النور فى صلبه- قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: فاهبطنى الله الى الارض فى صلب ادم عليه السلام وجعلنى فى صلب نوح وقذف بى فى صلب ابراهيم ثم لم يزل الله ينقلنى من الاصلاب الكريمة الى الارحام الطاهرة حتى اخرجنى من بين ابوى لم يلتقيا على سفاح قط- (الدر المنثور ص ٤/۳۲৯ لقد جاء كم رسول من انفسكم پاره ۱۱ توبه ۱۲٨ اية)

ভাবার্থ: ইবনে আবু উমর আদনী ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণনা করেন তিনি বলেন নিশ্চয় তিঁনি কোরেশি বা কুরেশ বংশীয়।তিঁনি মাখলুক (আদম আলাইহি সালাম) সৃষ্টির দুই হাজার বৎসর পূর্বে আল্লাহর দরবারে নূর ছিলেন।সেই নূর তাসবিহ পাঠ করতো এবং তাঁর তাসবির সাথে ফেরেশতাগণও তাসবিহ পাঠ করতো।অতঃপর যখন আল্লাহ তা’য়ালা হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করলেন,তখন আদম আলাইহিস সালাম এঁর পৃষ্টদেশে সেই নূর মোবারক স্থাপন করলেন।রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন-অতঃপর আল্লাহ তা’য়ালা আঁমাকে হযরত আদম আলাইহিস সালামের পৃষ্টদেশে থাকা অবস্থায় জমিনে পাঠালেন।অতঃপর হযরত নূহ আলাইহিস সালাম এঁর পৃষ্টদেশে আঁমাকে স্থাপন করলেন।বংশ পরম্পরায় আঁমাকে হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের পৃষ্টে থাকাকালীন নমরূদের তৈরি অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছিল।এভাবে স্থানান্তরিত হতে হতে পবিত্র পৃষ্টদেশে থেকে পবিত্র রেহেমে স্থানান্তরিত হতে থাকি এমনকি আঁমার পিতা-মাতা পর্যন্ত।আঁমার পূর্ব পুরুষের মধ্যে কখনো জিনা সংঘটিত হয়নি।’

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহ আনহুমা বলেন,
– ﻋﻦ ﺇﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ : ﻭﺗﻘﻠﺒﻚ ﻓﻲ ﺍﻟﺴﺎﺟﺪﻳﻦ ، ﻗﺎﻝ : ﻣﻦ ﺻﻠﺐ ﻧﺒﻲ ﺇﻟﻰ ﻧﺒﻲ ﺣﺘﻰ ﺻﺮﺕ ﻧﺒﻴﺎً ، ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺰﺍﺭ ﻭﺭﺟﺎﻟﻪ ﺛﻘﺎﺕ
অর্থাৎ এক নবী থেকে আরেক নবীর পৃষ্টদেশে (অবস্থান করে) অবশেষে আঁপনি নবী হয়েছেন।
[মাজমাউয যাওয়াইদ/কিতাবুত তাফসীর ৭ম খন্ড/ ৮৬ পৃস্টা] হাদিসটি সহীহ।  

★২১১.তাফসীরে কবীরে সূরা বাকারার ২৫৩ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় আদম (আ:) এঁর উপর রাসূল (ﷺ) এঁর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছে:

أن الملائكة أمروا بالسجود لآدم لأجل أن نور محمد عليه السلام في جبهة آدم
নিশ্চয় ফেরেশতাদেরকে আদম (আ:) কে সেজদা করতে আদেশ করা হয়েছিল। কারণ, আদম (আ:) এঁর পেশানীতে মুহাম্মাদ (ﷺ) এঁর নূর ছিল।
              *****দলিল*****
*(ক.) তাফসীরে কবীর,১ম খন্ড,পৃঃ ৩১৮
*(খ.) তাফসীরে লুবাব,৩য় খন্ড,পৃ: ২৩৩
*(গ.) তাফসীরে নিশাপুরী,২য় খন্ড,পৃ১০৭

✌হযরত আব্দুল্লাহ (রা:) এঁর পেশানীতে নবী (ﷺ) এঁর নূর মোবারক ছিল।

وأخبرنا وهب بن جرير بن حازم أخبرنا أبي قال سمعت أبا يزيد المدني قال نبئت أن عبد الله أبا رسول الله صلى الله عليه و سلم أتى على امرأة من خثعم فرأت بين عينيه نورا ساطعا إلى السماء فقالت هل لك في قال نعم حتى أرمي الجمرة فأنطلق فرمى الجمرة ثم أتى امرأته آمنة بنت وهب ثم ذكر يعني الخثعمية فأتاها فقالت هل أتيت امرأة بعدي قال نعم أمرأتي آمنة بنت وهب قالت فلا حاجة لي فيك انك مررت وبين عينيك نور ساطع إلى السماء فلما وقعت عليها ذهب فأخبرها أنها قد حملت خير أهل الأرض

রাসূল (ﷺ)এঁর পিতা আব্দুল্লাহ খাসয়াম গোত্রীয় এক মহিলার নিকট গেলে সে তাঁর দু’চোখের মাঝে আকাশ পর্যন্ত একটি উজ্জল নূর দেখতে পেল।সে বলল, তোমার কি আমাতে প্রয়োজন আছে ? তিনি বললেন,হ্যাঁ।তবে আমি জামরায় পাথর মারব।অত:পর তিনি জামরায় পাথর মেরে স্বীয় স্ত্রী আমেনা বিনতে ওহাব এর নিকট গেলেন।পরে যখন খাসয়ামী মহিলার কথা মনে পড়লে তিনি তার নিকট আসলেন।সে জিজ্ঞেস করল,তুমি কি আমার সাথে দেখা করার পরে কোন মহিলার সাথে মিলিত হয়েছিলে? তিনি বললেন, হ্যাঁ।আমার স্ত্রী আমেনা বিনতে ওহাবের সাথে।সে বলল,তাহলে তোমাতে আমার কোন প্রয়োজন নাই।তুমি যখন যাচ্ছিলে আমি তোমার দু’চোখে মধ্যখানে আকাশ পর্যন্ত প্রলম্বিত একটি উজ্জল নূর দেখতে পেয়েছিলাম। আর যখন তুমি তার সাথে মিলিত হয়েছো,সে নূরটি চলে গিয়েছে।আর সে বলল, উক্ত আমেনা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিকে গর্ভধারণ করেছেন।এ নূরটি ছিল মহানবী (ﷺ) এঁর রূহানী নূর।দুই. মহানবী (ﷺ) এঁর দেহ মুবারক।
[তবাকাতে ইবনে সাদ,১ম খন্ড, ৬৫ পৃষ্ঠা]

✌হযরত আব্দুল্লাহ (রাঃ) এঁর পৃষ্ঠদেশ থেকে রাসূলে আকরাম (ﷺ) এঁর জীবন কণিকা হযরত আমেনা (রাঃ) এঁর গর্ভে উপস্থিত হয়েছিলো বিশুদ্ধমতানুসারে হজ্জ্বের দিনসমূহের আইয়ামে তাশরীকের মধ্যবর্তী দিবসের জুমার রাত্রিতে।এজন্যই ইমাম আহমদ বলেন, জুমার রাত্রি লাইলাতুল কদরের রাত্রির চেয়েও উত্তম।কেননা ওই রাতে মাতৃউদরে শুভাগমন করেছিলেন মহাবিশ্বের মহামমতার প্রতিভু মহানবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (ﷺ) স্বয়ং।সুতরাং অন্য কোনো রাতই এই রাতের সমতুল্য হতে পারে না।কাজেই মিলাদ শরীফের রাতকে শবে কদরের চেয়েও উত্তম মনে করতে হবে।হাদীস শরীফে এসেছে,মিলাদ শরীফের রাতে আলমে মালাকুতে এই মর্মে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিলো যে,সমগ্র বিশ্বজগতকে পবিত্র নূর দ্বারা আলোকিত করে দাও।পৃথিবী ও আকাশের সকল ফেরেশতা তখন আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে উঠেছিলো। জান্নাতের রক্ষী ফেরেশতাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো,ফেরদৌসে আলোকে উন্মুক্ত করে দাও এবং সমস্ত জাহানকে সুরভি দ্বারা মোহিত করে দাও। আকাশ-পৃথিবীর সকল স্তরে ও স্থানে এই সুসংবাদ জানিয়ে দাও যে,নূরে মোহাম্মদী আজ রাতে মহাপুণ্যময়ী আমেনার উদরে আশ্রয় নিয়েছে।সমস্ত খায়ের ও বরকত,সম্মান,সৌভাগ্য, নূর ও রহস্যের উৎস এবং সকল জগত সৃষ্টির মূল,বণী আদমের মূল সমূহের মূল এ ধরাধামে আবির্ভূত হওয়ার সময় এখন সন্নিকটবর্তী।সুতরাং হে সৃষ্টিকুল! সম্মানিত ও আলোকিত হও।আনন্দ প্রকাশ করো।
[মাদারেজুন্নবুওয়াত,৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা: ১২৯, সেরহিন্দ প্রকাশন]

★২১২. হাদিসে পাকে আরও ইরশাদ হয়েছে

ﺭﺳﻮﻝ ﺃﻳﻦ ﻛﻨﺖ ﻭﺁﺩﻡ ﻓﻲ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻗﺎﻝ : ﻛﻨﺖ ﻓﻲ ﺻﻠﺒﻪ ﻭﺃﻫﺒﻂ ﺇﻟﻰ ﺍﻷﺭﺽ ﻭﺃﻧﺎ ﻓﻲ ﺻﻠﺒﻪ ﻭﺭﻛﺒﺖ ﺍﻟﺴﻔﻴﻨﺔ ﻓﻲ ﺻﻠﺐ ﺃﺑﻲ ﻧﻮﺡ ﻭﻗﺬﻓﺖ ﻓﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﻓﻲ ﺻﻠﺐ ﺃﺑﻲ ﺇﺑﺮﺍﻫﻴﻢ

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত।তিনি বলেন আমি রাসুল (ﷺ) কে জিজ্ঞাসা করলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ) হযরত আদম যখন জান্নাতে ছিলেন তখন আঁপনি কোথায় ছিলেন? রাসূল (ﷺ) মুচকি হাঁসি দিলেন এতে উঁনার দাঁত মোবারক দেখা গেল।এরপর তিঁনি (ﷺ) বললেন আঁমি তখন তাঁর পৃষ্টদেশে ছিলাম।তিঁনি যখন দুনিয়ায় অবতরণ করলেন তখনো আঁমি তাঁর পৃষ্টদেশে ছিলাম।আর নুহ (আঃ) যখন কিস্তিতে আরোহন করছিলেন তখন আঁমি তাঁর পৃষ্টদেশে ছিলাম।আর যখন ইব্রাহীম (আঃ) অগ্নিকূপে ছিল তখন আঁমি তাঁর পৃষ্টদেশে ছিলাম।
[ইবনে কাসির,আলবেদায়া ওয়ান নেহায়া,২/২৫৮]

✊বেদায়া ও নেহায়া গ্রন্থে উল্লেখ আছে- হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) একদিন নবী করীম [ﷺ]-এঁর খেদমতে আরয করলেন-“ইয়া রাসুলাল্লাহ! [ﷺ] হযরত আদম (عليه السلام) যখন জান্নাতে ছিলেন, তখন আঁপনি কোথায় ছিলেন”? হুযুর পুরনূর [ﷺ] মুচকি হাসি দিয়ে বললেন- “আদমের ঔরসে।তারপর হযরত নূহ (عليه السلام) তাঁর ঔরসে আঁমাকে ধারণ করে নৌকায় আরোহণ করেছিলেন। তারপর হযরত ইব্রাহীম (عليه السلام)-এঁর পৃষ্ঠদেশে।তারপর পবিত্র (ঈমানদার) পিতা মাতাগণের মাধ্যমে আঁমি পৃথিবীতে আগমন করি। আঁমার পূর্ব পুরুষগণের মধ্যে কেহই চরিত্রহীন ছিলেন না”
[বেদায়া-নেহায়া,২য় খন্ড,২৫ পৃষ্ঠা]

★২১৩. হযরত আদম (আঃ) এঁর ঔরস হতে হযরত মাতা হাওয়া (আঃ) এঁর পবিত্র গর্ভে ২০ বার জমজ বাচ্চা জন্ম হয় কিন্তু শীষ (আঃ) একক ভাবে জন্মগ্রহণ তথা শুভ-আগমন করেন।কারন তিঁনি ছিলেন নুরে মুহাম্মদীর ধারক ও বাহক।এই নুরে মুহাম্মদী হযরত শীষ(আঃ) এঁর কপালে উজ্জল ও দিপ্তীমান ছিল।আল্লাহ পাক হযরত আদম (আঃ) কে নুরে মুহাম্মদীর কথা জানিয়ে দিলেন।হযরত আদম(আঃ) এঁর ওফাতের পর হযরত শীষ(আঃ) সমস্ত আদম সন্তানের অবিভাবক হলেন। অত:পর আল্লাহ ওঁনাকে ওহীর মাধ্যমে নির্দেশ দিলেন তিঁনি যেন তাঁর সন্তান “আনুশ (আঃ) “কে অবিভাবক ঘোষনা করেন।তিঁনি “আনুশ (আঃ)” কে খলিফা নিযুক্ত করে হযরত আদম (আঃ) এঁর উপদেশ অনুসারে তাঁকে বললেন,”এ নুর মুবারককে নিয়ে কখনও কোন অপবিত্র নারীর সংস্পর্শে যাবে না; বরং সব সময় যেকোন অবস্থাতে এ “নুর” মুবারক এঁর পবিত্রতা রক্ষা করে চলবে। “পরবর্তীতে প্রতিটি যুগে এ নুরের বাহকগন বংশানুক্রমে এ “ওসীয়ত” রক্ষা করেছেন।
[তথ্যসূত্র:মাওয়াহিবে লাদুনিয়াহ,সিরাতে মুহাম্মদীয়া]

★২১৪. হাদিস শরীফে আরও ইরশাদ হয়েছে:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ” لَمَّا خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ خَبَرَ آدَمُ بَنِيهِ فَجَعَلَ يَرَى فَضَائِلَ بَعْضِهِمْ عَلَى بَعْضٍ قَالَ : فَرَأَى نُورًا سَاطِعًا فِي أَسْفَلِهِمْ ، فَقَالَ : يَا رَبِّ مَنْ هَذَا ؟ قَالَ : هَذَا ابْنُكَ أَحْمَدُ هُوَ الأَوَّلُ ، وَهُوَ الآخِرُ ، وَهُوَ أَوَّلُ شَافِعٍ

অর্থ: হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিঁনি ইরশাদ করেন,যখন মহান আল্লাহ তায়ালা হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করলেন, তখন উঁনার সন্তানদের দেখানো হলো।তখন হযরত আদম আলাইহিস সালাম উঁনার সন্তানদের পারষ্পরিক শ্রেষ্ঠত্ব দেখতে থাকেন। অবশেষে তিঁনি এক চমকপ্রদ নূর মুবারক দেখতে পেলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন, হে আঁমার রব! এই নূর মুবারক কার? মহান আল্লাহ ইরশাদ মুবারক করলেন,তিঁনি আঁপনার আওলাদ হবেন। অর্থাৎ শেষে আগমন করবেন। উঁনার নাম আসমানে আহমদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।তিঁনি সৃষ্টিতে প্রথম, তিঁনি প্রেরনে শেষ,তিঁনি সর্বপ্রথম শাফায়াতকারী।
    ******দলিল******
*(ক.) দালায়েলুন নবুওয়াত ৫/৪৮৩
*(খ.) খাসায়েসুল কোবরা ১/৭০
*(গ.) সুবহুল হুদা ওয়ার রাশাদ ১/৭১
*(ঘ.) শরহে মাওয়াহেব ১/৪৩

★২১৫. ইমাম সাইফুদ্দীন আবূ জা’ফর বিন উমর আল-হুমাইরী আল-হানাফী নিজ ‘আদ-দুররূল তানযীম ফী মওলিদিন্ নাবিই-ইল করীম’ শীর্ষক কিতাবে বলেন: আল্লাহ তাআলা যখন হযরত বাবা আদম (আ:)-কে সৃষ্টি করেন,তখন তিঁনি তাঁর মনে এই ভাবের উদয় করেন যার দরুণ তিঁনি মহান প্রভুকে প্রশ্ন করেন, ”ইয়া আল্লাহ! আঁপনি আঁমার কুনিয়া (বংশ-পরম্পরার নাম) কেন’আবূ মোহাম্মদ’(মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের পিতা) করেছেন?” আল্লাহ উত্তরে বলেন, “ওহে আদম! তোমার মাথা তোলো।” তিঁনি শির উঠিয়ে আরশে মহানবী (ﷺ)-এঁর নূর (জ্যোতি) দেখতে পান। হযরত আদম (আ:) জিজ্ঞেস করেন, “ইয়া আল্লাহ! এই নূর কোন্ মহান সত্তার?”

**আল্লাহতা’লা জবাবে বলেন, “তোমার বংশেই এই মহান নবী (ﷺ)-এঁর জন্ম তথা শুভ আগমন। আসমানে তাঁর নাম আহমদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং জমিনে মোহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।আঁমি তাঁকে সৃষ্টি না করলে তোমাকে বা আসমান ও জমিনকে সৃষ্টি করতাম না।”

★২১৬. হযরত ইবনে আলী ওমর আল-আদানী স্বীয় মুসনাদে হযরত ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করলেন, তখন তাঁকে তাঁর সন্তানদের পরস্পরের মধ্যে মর্যাদার তারতম্যটুকুও দেখাতে লাগলেন।তিঁনি (আদম আলাইহিস সালাম ) তাদের মধ্যে শেষপ্রান্তে একটা উজ্জ্বল নূর দেখাতে পেলেন।তখন তিনি বললেন,‘‘ হে রব! ইনি কে? ( যাকে সবার মধ্যে প্রজ্জ্বলিত নূর হিসাবে দেখতে পাচ্ছি?) উত্তরে মহান রাববুল আলামীন ইরশাদ করলেন,‘‘ ইনি হলেন তোমার পুত্র-সন্তান হযরত আহমদ মুজ্তবা (ﷺ) তিনি প্রথম,তিনি শেষ,তিনি হবেন আঁমার দরবারে প্রথম সুপারিশকারী (ক্বিয়ামতের দিনে)।
            *****দলিল******
*(ক.) আল -খাসাইসুল কুবরা ১ম খন্ড,পৃষ্ঠা ৩৯
*(খ.) কানজুল উম্মাল ৩২০৫৬ নং হাদীস খ ১১,পৃ:১৯৭
*(গ.) বাইহাকী ৫ম খন্ড পৃ: ৪৮৩

★২১৭. হাদীয়ে বাংগাল ও আসাম নামে পরিচিত মাওলানা কারামত আলী জৌনপুরী সাহেবের সাহেবজাদা মাওলানা আবদুল আউয়াল জৌনপুরী সাহেব আরবিতে একখানা কিতাব রচনা করেছেন।উক্ত কিতাবের  নাম:

     عمدة النقول في كيفية ولادة الرسول

অর্থঃ- ”নবী করীম [ﷺ]-এঁর বেলাদত শরীফের ধরণ সম্পর্কে উত্তম রেওয়ায়াত ও দলীল।”
✌কিতাবের এবারত নিম্নরূপঃ-

وفى   الاتحاف   بحب   الاشراف   للعلامة   عبد   الله   الشبراوى  الشافعى رحمة الله تعالى قال  فى تعليقه على قوله  وإذ  كنا نحكم  بطهارة    فضلاته  صلى   الله   عليه  وسلم   الغريبة    قال العلامة   التلمسانى كل مولد غير الأنبياء يولد  من الفرج وكل الانبياء غير نبينا مولودون من فوق الفرج وتحت السرة وأما نبينا     صلى  الله    عليه   وسلم   فمولود  من   الخاصرة  اليسرى تحت الضلوع ثم  التام لوقته خصوصية  له ولم يصح  نقل ن نبيا  من-الانبياء  ولد من لفرج  ولهذا    افتي  المالكية بقتل من قال  ان   النبي   صلي  الله   عليه  وسلم   ولد   من  مجري   ايول -انتها –
অর্থঃ- ”আল্লামা আবদুল্লাহ শাবরাভী শাফেয়ী (رحمة الله عليه) স্বীয় ‘আল আতহাফ  বিহুব্বিল আশরাফ’-গ্রন্থে নবী করীম[ﷺ]-এঁর পবিত্র দেহ থেকে বহির্গত যাবতীয় বর্জ বস্তুর পবিত্রতা শীর্ষক আলোচনা প্রসঙ্গে আল্লামা তিলিমসানী কর্তৃক একটি ফতোয়ার উল্লেখ করে বলেন-উক্ত আল্লামা তিলিমসানী ফতোয়া দিয়েছেন যে, ”আম্বিয়ায়ে কেরাম (عليهم السلام) ব্যতীত প্রত্যেক মানব সন্তান মায়ের প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে ভূমিষ্ট হয়ে থাকে।অন্যান্য আম্বিয়ায়ে কেরামগণ (عليهم السلام) ভূমিষ্ট তথা বেলাদত শরীফ হয়েছেন মায়ের নাভি ও প্রস্রাবের রাস্তার মধ্যবর্তীস্থান দিয়ে এবং আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা [ﷺ] ভূমিষ্ট তথা পৃথিবীতে তাশরীফ হয়েছেন বিবি আমেনার (رضي الله عنها) বাম উরুদেশ দিয়ে – যা বাম পাঁজরের হাঁড়ের নিচে অবস্থিত।তারপর উক্ত স্থান সাথে সাথেই জোড়া লেগে যায়।এই বিশেষ ব্যবস্থাধীনে ভূমিষ্ট তথা শুভ তাশরীফ হওয়া নবী করীম  [ﷺ]-এঁর একক বৈশিষ্ট্য।কোন নবী(عليه  السلام) মায়ের প্রস্রাবের স্থান দিয়ে ভূমিষ্ট তথা বেলাদত হওয়ার বর্ণনাটি সঠিক নয়।এ কারণেই মালেকী মাযহাবের মুফতী ও উলামাগণ ফতোয়া দিয়েছেন যে,”যে ব্যক্তি বলবে,নবী করীম [ﷺ] মায়ের প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে ভূমিষ্ট তথা পৃথিবীতে তাশরীফ হয়েছেন,তাকে কতল করা ওয়াজিব।”
[উমদাতুন নুকুল ফী কাইফিয়াতে বিলাদাতির  রাসূল-মাওলানা আবদুল আউয়াল জৌনপুরী এবং মূল গ্রন্থ আল আতহাফ বি-হুব্বিল আশরাফ-আল্লামা শাবরাভী]

*উক্ত ফতোয়া উল্লেখ করে মাওলানা আবদুল আউয়াল জৌনপুরী সাহেব নিজের মন্তব্য  ও ফতোয়া এভাবে পেশ করেছেনঃ-

اقول  وبالله  التوفيق- انه لما كان صلي  الله عليه وسلم  نورا كما قال الله تعالى فى القرآن المجيد قَدۡ جَآءَكُمۡ مِّنَ اللّٰهِ نُوۡرٌ  وَّكِتٰبٌ مُّبِيۡنٌۙ٠  وكما  روى  عن ذكوان أنه  لم  يكن  له  صلى الله عليه  وسلم  ظل لا   فى  قمر  رواه  الحاكم  الترمذى وكما  قال ابن سبع كان  صلى الله عليه وسلم نورا  فكان إذا مشى  فى   الشمس   أو   القمر  لا  يظهر له  ظل قال   غيره  ويشهد له قوله عليه السلآم فى دعائه واجعلني نورا كذا فى المواهب والذى يدل   على   أنه    كان   نورا    فى   يكن   أمه   أيضا   الاخ   …   فأى استبعاد خروجه صلى  الله عليه وسلم من غير مخرج معتاد للناس  وإذا أراد الله  لخلق يخلق ويبدع كيف ما يشاء إبداعا حقيقا من غير مثال سبق الأخ

অর্থঃ- আল্লাহর নিকট তৌফিক চেয়ে আমি (আব্দুল আউয়াল জৌনপুরী) বলছি-নবী করীম [ﷺ] আপাদমস্তক দেহধারী  নূর।যেমন,কোরআন মাজীদে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- ”তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ হতে একজন সম্মানিত নূর ও একটি স্পষ্ট কিতাব এসেছে।”

পবিত্র হাদিসে ও রাসূল  [ﷺ]কে নূর বলে প্রমাণ করা হয়েছে।যেমন-হযরত যাকওয়ান (رضي الله عنه) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে এসেছে যে-চন্দ্র-সূর্যের আলোতে নবী করীম [ﷺ]-এঁর ছায়া পড়তো না।কেননা,নূরের ছায়া হয় না।উক্ত হাদীস হাকিম তিরমিজী নিজ কিতাবে সংকলন করেছেন।   

হযরত ইবনে ছায়াব বর্ণনা করেন-”নবী করীম[ﷺ] ছিলেন আপাদমস্তক নূর।কেননা,যখন তিঁনি দিবাকরের আলোতে কিংবা চন্দ্রিমা নিশিতে চলাফেরা করতেন,তখন তাঁর ছায়া দেখা যেত না।”নবী করীম[ﷺ] যে মায়ের গর্ভে ও নূর হিসেবেই বিরাজমান ছিলেন,এ মর্মে আবু যাকারিয়া ইবনে ইয়াহইয়া কর্তৃক বর্ণিত হাদীস ও এটার সত্যতা প্রমাণ করে।

Leave a comment